নামাজ আদায়ের পরেও যে কারণে অভিশাপ পেতে হয়

নামাজ আদায়ের পরেও যে কারণে অভিশাপ পেতে হয়

অনলাইন ডেস্ক

নামাজ বেহেশতের চাবি। ইসলামে পাঁচ স্তম্ভের একটি নামাজ। যারা যত্নসহকারে একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে, মহান আল্লাহ তাদের পাপাচার থেকে বিরত রাখেন। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর ওপর ঈমান আনার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ।

দুনিয়াতে সফলতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো নামাজ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, অবশ্যই মুমিনরা সফল হয়েছে, যারা তাদের নামাজে বিনয়াবনত। (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১-২)। পবিত্র কোরআনে কারিমের ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।

কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তারপর সে নামাজিদের জন্য ধ্বংস। যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে গাফিলতি করে। ’ -সূরা মাউন: ৪-৫

এখন প্রশ্ন হলো- ধ্বংসের কাতারে থাকা ওই মুসল্লি কারা? ইসলামি স্কলাররা কোরআর-হাদিসে আলোকে বলেছেন, ওই মুসল্লিরা (নামাজি) হলো-

*যাদের কাছে নামাজ পড়া ও না পড়া উভয়টিরই গুরুত্ব এক ও অভিন্ন।

*কখনও তারা নামাজ পড়ে আবার কখনও পড়ে না।

*যখন নামাজ পড়ে, নামাজের আসল সময় থেকে পিছিয়ে যায় এবং সময় যখন একেবারে শেষ হয়ে আসে, তখন উঠে গিয়ে চারটি ঠোকর দিয়ে আসে।

*নামাজের জন্য ওঠে ঠিকই কিন্তু একবারে যেন উঠতে মন চায় না এমনভাবে ওঠে এবং নামাজ পড়ে নেয় কিন্তু মনের দিক থেকে কোনো সাড়া পায় না। যেন কোনো আপদ তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

*নামাজের চেয়ে কাজের গুরুত্ব বেশি দেওয়া। নামাজের সময় চলে যাচ্ছে তিনি কাজে নিমজ্জিত আছেন।

*নামাজে দাঁড়িয়ে কাপড় নিয়ে খেলা করে, হাই তুলে, আল্লাহর স্মরণ সামান্যতম তাদের মধ্যে থাকে না। পুরো নামাজের মধ্যে তাদের এ অনুভূতি থাকে না যে, তারা নামাজ পড়ছে।

*নামাজের মধ্যে পঠিত কোরআনের আয়াত, তাসবিহ ও দোয়াগুলো তোতাপাখির মতো আওড়ে যায়। কখন কী পড়ছে সেদিকে তাদের কোনো খেয়াল থাকে না। ফলে নামাজ পড়তে থাকে কিন্তু মন চলে যায় দূরে, বহু দূরে।

*তাড়াহুড়া করে এমনভাবে নামাজ পড়ে, যাতে রুকু ও সিজদা কোনোটাই ঠিকমতো হয় না। কেননা, কোনো প্রকারে নামাজ পড়ে দ্রুত দায়িত্ব শেষ করা।

উল্লেখিত আলামতগুলোই আখেরাতের প্রতি ঈমান না রাখার আলামত। কারণ মুসলমান হিসেবে দাবিদাররা নামাজ পড়লে কোনো পুরস্কার পাবে বলে মনে করে না এবং না পড়লে তাদের কপালে শাস্তি ভোগ আছে এ কথা বিশ্বাস করে না। এ কারণে তারা এ কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করে।


অভাব দুর হবে, বাড়বে ধন-সম্পদ যে আমলে

সংবাদ উপস্থাপনায় ও নাটকে রূপান্তরিত দুই নারী

করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণে বাধা নেই ইসলামে

কমেন্টের কারণ নিয়ে যা বললেন কবীর চৌধুরী তন্ময়


কোরআনে কারিমে মুনাফিকদের এ অবস্থাটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘তারা যখনই নামাজে আসে অবসাদগ্রস্তের মতো আসে এবং যখনই আল্লাহর পথে খরচ করে অনিচ্ছাকৃতভাবে করে। ’ -সূরা তাওবা: ৪

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এটা মুনাফিকের নামাজ, এটা মুনাফিকের নামাজ, এটা মুনাফিকের নামাজ। সে আসরের সময় বসে সূর্য দেখতে থাকে। এমনকি সেটা শয়তানের দু’টো শিংয়ের মাঝখানে পৌঁছে যায়। অর্থাৎ সূর্যাস্তের সময় নিকটবর্তী হয়, তখন সে উঠে চারটে ঠোকর মেরে নেয়। তাতে আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করা হয়। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

হজরত রাসূলে মকবুল (সা.) অন্যত্র বলেছেন, যে ব্যক্তি যথারীতি নামাজ আদায় করে রুকু-সেজদা পুরোপুরি সমাধা এবং অন্তরে নম্রতা, বিনয়, ভক্তি ও মহব্বতকে স্থান দেয়, তার নামাজ নূরানী হয়ে আরশ পর্যন্ত আরোহণ করে। সেখান থেকে সর্বদর্শী আল্লাহতায়ালার নিকট দোয়া করতে থাকে। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি অতীব সতর্কতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে না- তাকে অভিসম্পাত করতে থাকে।

কিন্তু অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, যারা নামাজে অবহেলা করে, তারা দ্বিনকেই অবহেলা করে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নামাজ কায়েম করল, সে দ্বিন কায়েম করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল সে দ্বিন ধ্বংস করল। (বায়হাকি, হাদিস : ২৫৫০

দুনিয়া-আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে অত্যন্ত বিনম্রচিত্তে সমার্পিত হৃদয়ে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে নিজকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করে সত্যিকার আল্লাহর খাস বান্দা হিসাবে আমাদেরকে নামাজের মাধ্যমে নিজদের বিলিয়ে দেই এবং মহান পাক পরওয়ারদেগার জীবনের শেষ মুহর্ত পর্যন্ত সহিহশুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করার তওফিক দেন। অন্যথায়  আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।

news24bd.tv/আলী