চ্যানেল টানেল: দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ রেলপথ

চ্যানেল টানেল: দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ রেলপথ

Other

চ্যানেল টানেল ইংলিশ চ্যানেলের সমুদ্র তলদেশ দিয়ে নির্মিত একটি পাতাল রেল সুড়ঙ্গ। ৫০.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি যুক্তরাজ্যের ফোকস্টোন ফ্রান্সের কোকুয়েলসকে যুক্ত করেছে। জাপানের সেইকান টানেলের পরে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম রেল টানেল। তবে সমুদ্র তলের অংশ বিবেচনায় এটি বিশ্বে দীর্ঘতম।

এটি চানেল বা ইউরোটানেল নামেও পরিচিত।

টানেলটির সর্বনিম্ন পয়েন্টের দৈর্ঘ্য ৭৫ মিটার। সমুদ্রের তলদেশে দৈর্ঘ্য ৩৭.৯ কিলোমিটার। টানেলে তিনটি সুড়ঙ্গ রয়েছে যার দুটি দিয়ে ট্রেন চলাচল করে এবং তৃতীয়টি মেরামত-সংরক্ষণ কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে টানেলটির গড় গভীরতা ৪৫ মিটার।

news24bd.tv

১৯৯৪ সালে এ টানেল রেল চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হয়। এ টানেল দিয়ে ইউরোস্টার রেল সার্ভিস চালু রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ইউরোটানেল শাটল, যেটা দিয়ে মোটরগাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। টানেলের দুই প্রান্তে দুটি রেলস্টেশান রয়েছে। টানেল পাড়ি দিয়ে এক স্টেশান থেকে অন্যটিতে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ৩৫ মিনিট।

ইংলিশ চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার ধারণা প্রথম উত্থাপিত হয় ১৮০২ সালে। ব্রিটিশ রাজনৈতিক উদ্যোগ ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু সম্পর্কিত বিভিন্ন কারণে এই কাজ বিলম্বিত হয়। অবশেষে ১৯৮৮ সালে ইউরোটানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং নির্মাণ শেষে ১৯৯৪ সালে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

news24bd.tv

প্রাথমিক নির্মাণ ব্যয় ৪.৬৫০ বিলিয়ন পাউন্ড ধরা হলেও এই অর্থে প্রকল্পটির মাত্র ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়। নির্মাণ শুরুর ২০ বছর আগে সম্পন্ন হওয়া এক পরীক্ষায় জানা যায়, মাটির চক মার্ল স্তর ভেদ করে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা সম্ভব। মাটির এ স্তর সুড়ঙ্গ নির্মাণের উপযোগী। এই স্তরের সুবিধা হল এটা বেশ অভেদ্য, গর্ত করার জন্য সহায়ক ও শক্ত।  

যুক্তরাজ্যের অংশে সুড়ঙ্গটির পুরো অংশ এই চক মার্ল মাটির ভেতর দিয়ে নির্মিত। চ্যানেল টানেল তিনটি প্যাসেজের সমন্বয়ে গঠিত। এর মধ্যে দুইটির ব্যাস ৭.৬ মিটার, যেগুলো ৩০ মিটার ব্যবধানে অবস্থিত। আরেকটি ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এবং এর ব্যাস ৪.৮ মিটার।  

news24bd.tv

এর একটি সার্ভিস টানেল আছে যেটি মূল টানেল নির্মাণের আগেই ভূ-গর্ভের অবস্থা পরীক্ষণের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়। ফ্রান্সের অংশে চ্যানেল টানেল নির্মাণের জন্য পাঁচটি মেশিন ব্যবহৃত হয়, অপরদিকে ইংল্যান্ডের অংশে ব্যবহৃত হয় ছয়টি। সার্ভিস টানেলটি সার্ভিস টানেল ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম এবং লাইট সার্ভিস টানেল ভেহিকেল ব্যবহার করে।

news24bd.tv
 
ইংল্যান্ডের ক্যাসেল হিল এবং ফ্রান্সের বয়সিংগ এলাকায় টানেলটি সমুদ্রে প্রবেশ করেছে। এই দুই প্রবেশ মুখের মধ্যে টানেলের দৈর্ঘ্য ৫০.৫ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৩.৩ কিলোমিটার ফ্রান্সে ভূ-পৃষ্ঠের নিচে, ৯.৩ কিলোমিটার ইংল্যান্ডের ভূ-পৃষ্ঠের নিচে এবং ৩৭.৯ কিলোমিটার সমুদ্রের তলেদেশে অবস্থিত।

news24bd.tv আয়শা