এক বর্ষা মুখর রাতে ম্লান হারিকেনের আলোয়

এক বর্ষা মুখর রাতে ম্লান হারিকেনের আলোয়

Other

ছোটবলোয় আমার খুব জ্বর হতো। জ্বর ভালোই হতে চাইত না। জ্বর বাড়লে কাঁথা পেচিয়ে দিতেন মা। আমি কাঙালের মতো কাঁথা মুড়ি দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম।

প্রবল জ্বরের সময় আস্তে আস্তে পেরিয়ে যাচ্ছে, যাচ্ছে। গাঢ় লাল হয়ে আসছে সিলিঙের রোদের রং। ঘোর জ্বরের মধ্যে অষ্পষ্ট ঘোর ঘোর হয়ে যায় পৃথিবী।  

স্বপ্নের মতো অবাস্তব হয়ে যায় চারধার।

ঘুম ও জগরণের তটরেখা ঘুচে যায়। চেনামুখ বুকের ওপর ঝুঁকে চোখে চোখ রেখে চেয়ে থাকে। আমি ঠিক যেন চিনতে পারি না। কখনও টের পাই কার যেন ভেজা ঠান্ডা হাত আমার কপাল আর বুক ছুঁয়ে জ্বর দেখছে। সেই শীতস্পর্শে শউরে ওঠে গা।  

মাঝে মাঝে আধা-চেতনায় চমকে উঠে টের পাই, গভীর নিস্তব্ধতার মধ্যে বালতিতে জল পড়ার গভীর বিষন্ন শব্দ। মাথা, মুখ আর কানের পিঠ বেয়ে জলের ধারা নামে। মনে হয় জলপ্রপাতের মধ্যে শুয়ে আছি। চোখ খুলে দেখি বিছানার ধারে ঝুলে আছে মাথা, মাথার নীচে অয়েলক্লথের লাল রং। মেঝেয় রাখা বালতি।  


নারী পুলিশকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

দৃষ্টিনন্দন ১৬ পরীর পালং খাট, দাম হেঁকেছেন কোটি টাকা

প্রেমিকা ছেড়ে যাওয়ায় ফেসবুকে স্টাট্যাস দিয়ে জাবি ছাত্রের আত্মহত্যা

অবৈধ সমিতির আড়ালে সুদের রমরমা কারবার, সর্বশান্ত সাধারণ মানুষ


কোনওটারই অর্থ বুঝতে পারি না। কেবল মনে হতে থাকে, পাতকুয়োর মধ্যে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছি। এক্ষুনি পড়ে যাব। ভয় পেয়ে নড়ে উঠি, জলের ধারা থেকে মাথা সরিয়ে নিই। কে যেন চেপে ধরে থাকে।  

বোলতার পাখার শব্দ কানে আসে। তখন কেমন নেশার মতো একটু ঘুম লেগে আসে। হঠাৎ ঠান্ডা স্পর্শে চমকে দেখি-মা। আমার কপালে হাত রেখে জ্বর দেখছে। আমি তখন তার হাতে মাছের আঁশটে গন্ধ পাই। আর তখনই ঘরে ফাঁক ফোঁকর দিয়ে বাতাস আসে। দপদপিয়ে ওঠে কমিয়ে রাখা হারিকেনের শিষ। ঘরময় ভৌতিক ছায়া নড়েে উঠে।  

তখন হঠাৎ টের পাই, চারিদিকের এক অলৌকিক শূন্যতা আমাকে আমার চেনা জগৎ থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। মনে পড়ে না আমি কে, নাম মনে পড়ে না, ঘর মনে পড়ে না, বয়স মনে পড়ে না। কেবল মনে হয় আমি আবহমান কাল থেকে এমনি এক বর্ষা মুখর রাতে ম্লান হ্যারিকেনের আলোয় জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পর শুয়ে আছি।

news24bd.tv আয়শা