ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাতে আরও ৩ জন নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাতে আরও ৩ জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী প্রতিবাদ মিছিলে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনার জেরে রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এই হরতালের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে পূর্বঘোষিত হরতালকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, জেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ মার্কেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, জেলা ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, জেলা সাব রেজিস্টার অফিসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস-প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালিয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।   

রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আহত অবস্থায় নিয়ে আসার পর গুলিবিদ্ধ দুজন মারা গেছেন।

এছাড়া শনিবার গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নূরুল আমিন নামের আরও একজন মারা গেছেন।

নিহত দুজনের একজন হলেন সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাটিহাতা গ্রামের হাদিস মিয়া ওরফে কালন মিয়া (২৩)। তার বাবার নাম আলতাব আলী ওরফে আলতু মিয়া। আরেকজন সরাইল উপজেলা সুফি আলীর ছেলে আল-আমিন (১২) ।

নিহত ব্যক্তির বড় ভাই মাওলানা আবদুর রহিম (৩৮) বলেন, আমার ভাই পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে। লাশ আমাদের বাড়িতে আছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন।

এনিয়ে শুক্রবার (২৬ মার্চ) থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৯ জনে দাঁড়াল। । তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।  

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘হরতালের নামে হেফাজত ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলাগুলো গভীর ষড়যন্ত্র। হামলা প্রতিরোধে প্রশাসনসহ সবাই নীরব রয়েছে। ’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, আজকের পরিস্থিতি আপনারা নিজেরাই দেখছেন। জনগণের জানমালের রক্ষায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসব তাণ্ডব চালাচ্ছে জামায়াত, শিবির ও বিএনপি।


ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে সরকারি স্থাপনায় আগুন,প্রেসক্লাবে হামলা

পল্টন মোড়ে লাঠিসোটা নিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীদের অবস্থান

হরতালকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

সাইনবোর্ডে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ৩


ঢাকা-সিলেট, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কমপক্ষে ৪০টি স্পটে টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, শনিবার রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তারা হলেন- জুরু আলম, বাদল মিয়া, সুজন মিয়া (২২), কাউসার (২৫), জোবায়ের মিয়া (১৪), হোসাইন (২২), সুলতান, কাওসার মিয়া, আলামিন। বাকিদের নাম জানা যায়নি। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।  

এদিন সকাল থেকেই হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে। হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সভা করে। বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের জেলার সাধারণ সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহসহ অনেকে।

news24bd.tv/আলী