৬ষ্ঠ ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে ভাসানচর পৌঁছেছে আরও ২১৪৭ রোহিঙ্গা

৬ষ্ঠ ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে ভাসানচর পৌঁছেছে আরও ২১৪৭ রোহিঙ্গা

Other

ষষ্ঠ ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছেছেন আরও ২ হাজার ১৪৭ জন রোহিঙ্গা। এর মধ্যে ৫৪৭ জন পুরুষ ও ৬৩০ জন নারী এবং ৯৭০জন শিশু রয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ৬টি জাহাজে চট্টগ্রাম থেকে রওয়ানা হয়ে তারা ভাসানচরে পৌঁছায়। এ সময় ঘাটে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহে আলম জানান, ভাসানচরে আসার পর পরই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তারপর রোহিঙ্গাদের দলটিকে নিয়ে যাওয়া হয় ওয়্যার হাউজে। সেখানে নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা তাদেরকে ভাসানচরে বসবাসের বিভিন্ন নিয়ম কানুন সম্পর্কে ব্রিফ করেন। ওয়্যার হাউজে তাদেরকে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হয়।

পরে ভাসানচরের ক্লাস্টারে স্থানান্তর করা হয়।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগের ন্যায় আগত রোহিঙ্গাদের তিন দিন খাওয়ানো হবে। পরে তাদের রেশন প্রদান করা হবে।

এরআগে, কক্সবাজারের উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট হতে রোহিঙ্গাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে চট্রগ্রাম নৌবাহিনীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই বালুখালীর রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়ন-৩ এ স্থানান্তরের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় মোট ২১৪৭ জন রোহিঙ্গা নৌবাহিনীর ৬টি লজিস্টিক জাহাজযোগে চট্টগ্রাম বোটক্লাব জেটি হতে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে আনুষ্ঠানিকভাবে নারী-পুরুষ,শিশুসহ নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা।  

গত ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে আরও ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছায়। গত বছরের ৮ মে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জল সীমায় ভাসতে থাকা ২৭৭ রোহিঙ্গাদের আরও একটি দলকে ভাসান চরে স্থানান্তর করা হয়। কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরে বোটে ভাসমান অবস্থা থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

গত ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় দফার প্রথম পর্যায়ে  ভাসানচরে এসে পৌঁছান এক হাজার ৭৭৬ জন রোহিঙ্গা। ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় পর্যায়ে  আরও ১ হাজার ৪৬৭ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছায়।


হেফাজতের বিক্ষোভ, পুলিশের রাবার বুলেট-লাঠিচার্জ, আহত ১৫

নৌ পথে আগের মতোই গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন, অথচ ভাড়া বৃদ্ধি

ভ্যানে চাকায় ওড়না পেচিয়ে স্কুলছাত্রীর করুণ মৃত্যু

দেশে করোনা শনাক্তে ফের রেকর্ড


১৫ ফের্রুয়ারি চতুর্থ দফায় প্রথম ধাপে দুই হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছায়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার ১১ জন রোহিঙ্গার পৌঁছায়। গত ৩ মার্চ পঞ্চম ধাপে প্রথম পর্যায়ে ভাসান চরে দুই হাজার ২৫৭ জন রোহিঙ্গা পৌছে। গত ৮ মার্চ পঞ্চম ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার ৭৫৯জন রোহিঙ্গা শরণার্থী পৌঁছে। গত ১ এপ্রিল ৬ষ্ঠ ধাপে প্রথম পর্যায়ে ভাসানচরে পৌঁছেছে আরও ২ হাজার ১২৮জন রোহিঙ্গা।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে আসে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি শরণার্থী ক্যাম্পে রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১১ লাখ।

এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসমান চর স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল হাতিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠা ভাসানচরে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান শেষ হয়।  

২০১৯ ইং সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও আগেই শেষ হয় সকল অবকাঠামো নির্মান। হাতিয়া থেকে প্রায় ৫০কিলোমিটার দূরে ১৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার দ্বীপের এ আশ্রয়ন প্রকল্পে ১২০টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। এতে ১ লাখ রোহিঙ্গার বাসযোগ্য করা হয়েছে।

news24bd.tv / কামরুল