প্রায় ছয়দিন পর করোনো টেস্টের ফলাফল পেলাম। আচ্ছা একটা টেস্টের ফল পেতে কেন পাঁচদিনের বেশি সময় লাগবে? দেশে করোনার একটা বছর হতে চলল। এতোদিনেও কী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল দেওয়ার সক্ষমতা তৈরি হওয়া উচিত ছিল না আমাদের? তাহলে অগ্রগতিটা কোথায় হলো?
অন্য কারও কথা জানি না। দেখেন নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
সোমবার দুপুরে একটু জ্বর বোধ করি। পরদিন মঙ্গলবার সিরিয়াল নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সরকারি ফি আবার দিতে হবে নগদে। আমার নগদ ছিল না।এর আগে ৪৮ ঘণ্টা পর প্রথম সেই হাসপাতালে ফোন দিই। যেখানে স্যাম্পল দিলাম সেই হাসপাতালে ফোন দেওয়ার পর তারা বলে ৭২ ঘণ্টা লাগবে। ৭২ ঘণ্টা পর ফোন দিলে বলে ৯৬ ঘণ্টা। এরপরও ফল পাচ্ছিলাম না।
ফল পাচ্ছিলাম না বলে আমি বুধবারের পর আর বাসা থেকে বের হইনি। যদিও বুঝতে পারছিলাম আমার করোনা না, তারপরেও ফল না পেলে নিশ্চিত হই কী করে? বাধ্য হয়ে আজ আবার ফোন দিলে তারা জানায়, তারা শুধু স্যাম্পল সংগ্রহ হরে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ফলাফল দেবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তাদের নাকি জানানো হয়েছে এখনো ফল দিতে পাঁচ-ছয়দিনও লাগতে পারে।
আমি শুধু ভাবছিলাম ফলাফল দিতেই যদি পাঁচ-ছয়দিন লেগে যায় তাহলে এই পাঁচ ছয়দিনে আক্রান্তের কাছ থেকে কতোজনের কাছ থেকে ছড়াতে পারে? আমি না হয় ঘর থেকে বের হইনি পাঁচদিন যাদের রোজ বের হতে হয়? বাধ্য হয়েই সন্ধ্যায় আরেক ডাক্তার ভাইকে ফোন দিলাম। অবশ্য এর কিছুক্ষণ পর ফল পেলাম রাত পৌনে আটটার দিকে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ
বাগেরহাটে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষকের পিটুনিতে আহত ছাত্র হাসপাতালে
সৌদি যুবরাজের খেজুর খাওয়ার মতো গরীব বাংলাদেশে নেই
শেরপুরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইনে প্রাণ গেল কিশোরের
ও হ্যা আমার করোনা নেগেটিভ এসেছে। আমার ধারণা আমার যেহেতু টিকা নেওয়া ছিল কাজেই নেগেটিভ হয়েছে। আমার মনে হয় আমরা যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে বলে ভেবেছিলাম সেটা হয়নি। টিকাই এখন আমাদের ভরসা। কিন্তু আমরা কেন গণহারে সবাইকে টিকা দিতে পারছি না? আমার কাছে মনে হয় সবাইকে টিকা দেওয়ার আওতায় আনা উচিত। আমার মনে হয় আমরা অনেক সময় পেলেও সুযোগগুলো যথাযথ কাজে লাগাতে পারছি না।
আচ্ছা আমরা কেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফল দিতে পারব না? সেই সক্ষমতা কী আমাদের তৈরি হয়নি? আচ্ছা জেলায় জেলায় আইসিইউ হওয়ার কথা ছিল সেগুলো কোথায়? আমরা যে স্বাস্থ্যখাতে নানা প্রতিশ্রুতির কথা শুনছিলাম সেগুলো আগালো না কেন? আচ্ছা আমরা কী সবসময়ই প্রকৃতির উপর অপেক্ষা করে থাকব?
আমি জানি না। বাইরে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। একটা শীতল হাওয়া। আচ্ছা এই বৃষ্টি কী কোনোভাবে আমাদের করোনা কমাতে সহায়তা করবে? জানি না। তবে যেটা জানি সেটা তো আরও একটা রেকর্ড। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৭ জনের, যা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ। ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণে মারা গেছেন ৫৩ জন। এ নিয়ে টানা ৬ দিন ধরে ৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন।
এর মধ্যেই কাল শুরু হচ্ছে হালকা ধরনের লকডাউন। আজকাল বেশ ভয় লাগে আশপাশ নিয়ে। এই দেশের মানুষদের নিয়ে। বারবার বলছি লিখছি আবারও বলি, প্লিজ জরুরি প্রয়োজন না হলে কম বের হন বাসা থেকে। সবাই মাস্ক পরুন। নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। হাত ধুঁতে হবে নিয়মিত। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁচতে হবে, বাঁচাতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভালো রাখুন।
করোনার দিনরাত্রি।
৪ এপ্রিল ২০২১, ঢাকা।
(ফেসবুক থেকে)
লেখক: শরিফুল হাসান, গণমাধ্যম ও উন্নয়ন কর্মী
news24bd.tv তৌহিদ