মহামারী রোধে মহানবীর নির্দেশনাকে মানছেন মার্কিন গবেষক

মহামারী রোধে মহানবীর নির্দেশনাকে মানছেন মার্কিন গবেষক

অনলাইন ডেস্ক

মহামারির মতো বিপদ-আপদ রাসুল (সা.)-এর যুগেও ছিল। সাহাবায়ে কেরামের সময়কালেও বিভিন্ন মহামারির উদ্ভব ঘটেছে। আর তারাও অত্যন্ত চমৎকারভাবে সেগুলো মুকাবিলার ব্যবস্থা নিয়েছেন। মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন।

করোনার করাল থাবায় আক্রান্ত বিশ্ব। কোনো ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না এ ভাইরাসকে। করোনা প্রতিরোধে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে কোয়ারেন্টাইন ও সামাজিক দুরত্ব ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

কিন্তু আপনি আমি যে কোয়ারেন্টাইন নিয়ে এত আলোচনা করছি তা সর্বপ্রথম কে বলেছিলেন জানেন? আমাদের সকলের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।   এমনটিই বলছেন মার্কিন এক গবেষক।  

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও সংবাদভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। প্রতিবেদনটি লেখেন মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবস্থিত রাইস ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক। এছাড়া তিনি একজন আন্তর্জাতিক বক্তা।

মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন তার রিপোর্টে লেখেন, আপনারা কি জানেন মহামারির সময়ে সর্বপ্রথম কে এ সবচেয়ে ভালো কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবন করেছেন?

আজ থেকে প্রায় ১৩শ’ বছর আগে ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোয়ারেন্টাইনের ধারণা দেন। যদিও তার সময়ে সংক্রামণ রোগের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তারপরও তিনি এসব রোগব্যাধিতে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা ছিল কোভিড-১৯ এর মতো প্রাণঘাতী রোগ মোকাবিলায় দুর্দান্ত পরামর্শ। তার সেই পরামর্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনো মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

এর উদাহরণ হিসেবে মার্কিন গবেষক মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি বাণী উল্লেখ করেন।  

তিনি লেখেন- মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও তখন সেখানে প্রবেশ করো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমার অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ করো না।

তিনি আরও বলেন, যারা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের সুস্থ মানুষ থেকে দূরে থাকতে হবে। এভাবে বিভিন্ন সময়ে মানব জাতিকে সংক্রামণ থেকে রক্ষা করতে মুহাম্মদ (সা.) রোগব্যাধিতে আক্রান্ত লোকদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও উদ্বুদ্ধ করতেন।

আবূ হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বললেন, সংক্রমনের অস্তিত্ব নেই। তখন এক বেদুঈন বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমার উটগুলো হরিনীর ন্যায় সুস্থ থাকে। এরপর একটি চর্মরোগে আক্রান্ত উট এগুলোর মধ্যে প্রবেশ করার পরে অন্যান্য উটও আক্রান্ত হয়ে যায়।  


ঝর্ণার বড় ছেলের দাবী ডিভোর্সের আগেই মাওলানা মামুনুল মাকে কু প্রস্তাব দেয়

রিকশা করে বই মেলায় যেতে বাধা নেই : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

মামুনুল হক অবরুদ্ধের ঘটনায় সোনারগাঁও থানার ওসি বদলি


তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেন, তাহলে প্রথম উটটিকে কে সংক্রমিত করল? (বুখারী, আস-সহীহ ৫/২১৬১, ২১৭৭; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৭৪২।

পাশাপাশি সংক্রমনের বিষয়ে সতর্ক হতেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) নির্দেশ দিয়েছেন।  

তিনি বলেন, অসুস্থকে সুস্থের মধ্যে নেয়া হবে না (রুগ্ন উট সুস্থ উটের কাছে নেবে না)। (বুখারী, আস-সহীহ ৫/২১৭৭; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৭৪২-১৭৪৩)

‘যদি তোমরা শুনতে পাও যে, কোনো জনপদে প্লেগ বা অনুরূপ মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে তবে তোমরা তথায় গমন করবে না। আর যদি তোমরা যে জনপদে অবস্থান করছ তথায় তার প্রাদুর্ভাব ঘটে তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না। (বুখারী, আস-সহীহ ৫/২১৬৩; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৭৩৮, ১৭৩৯)

এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) প্রায় দেড় হাজার বৎসর পূর্বে সংক্রমন প্রতিরোধে বিচ্ছিন্নকরণ (quarantine) ব্যবস্থার নির্দেশনা প্রদান করেন।  

নবী মুহাম্মদ (সা.) ১৩০০ বছর আগে  মহামারি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন। কভিড-১৯-এর মতো রোগের বিস্তার রোধে মুহাম্মদ (সা.)-এর নির্দেশনা খুবই প্রাসঙ্গিক।

মোটকথা, তাঁর অনুসারীরা যেকোনও পরিস্থিতির সম্মুখীন হোক তা থেকে পরিত্রাণের ব্যাপারেই তিনি তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ধর্মীয় ক্ষেত্রে তিনি যেমন ব্যাপক অবদান রেখে অমর হয়ে আছেন, ঠিক তেমনই মানুষের জীবনযাপন বিষয়ক মহামূল্যবান যে পরামর্শ তিনি দিয়ে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়।

news24bd.tv/আলী