লকডাউনে মসজিদ-মাদরাসা উন্মুক্ত রাখতে আবদুচ্ছালাম চাটগাঁমীর খোলা চিঠি

লকডাউনে মসজিদ-মাদরাসা উন্মুক্ত রাখতে আবদুচ্ছালাম চাটগাঁমীর খোলা চিঠি

অনলাইন ডেস্ক

মসজিদে মুসল্লির উপস্থিতির ওপর বিধিনিষেধ বাতিল এবং দেশের সব নাজেরা ও হেফজখানাকে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের প্রধান মুফতিয়ে আযম আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগাঁমী।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে এ আহ্বান জানান তিনি।

আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগাঁমীর ছেলে মাওলানা মুফতি ইসমাইল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খোলা চিঠিতে আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগাঁমী বলেন, প্রায় এক বছরের বেশি সময় দরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা মহামারি পরিস্থিতি বিদ্যমান।

এ কারণে বিশ্বের বহু দেশে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ ও আক্রান্ত হয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় এ সময়ে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুর হার অনেক কম ছিল।


কলকাতায় বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা

যন্ত্রাংশের প্যাকেটে রাখা বোমার বিস্ফোরণে শিশু নিহত

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে করোনা শনাক্ত ৪১৯২


উলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মসজিদ-মাদরাসা উন্মুক্ত থাকায় লাখ লাখ মাদ্রাসা ছাত্র, উলামায়ে কেরাম ও মুসল্লিদের ইবাদত-বন্দেগী, জিকির-আযগার ও দোয়ার বরকতে বাংলাদেশে করোনা মহামারির ক্ষয়ক্ষতি অন্য অনেক দেশের তুলনায় কম হয়েছে। ’

খোলা চিঠিতে তিনি আরও বলেন, বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারক শুরু হয়েছে।

এই মাস ইসলামে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বরকতময়। এই মাসে রোযা, নামায, যাকাত ইত্যাদি ফরয আমলসমূহের সাওয়াব সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয়।

এছাড়া সব নফল আমলসমূহের সাওয়াব ফরযের সমতুল্য হয়ে যায়। এই মাসে শ্রমিক মজদুরসহ অধীনস্থদের কাজ সহজ করলে গুনাহ মাফ করা হয়। রোজাদারগণকে আহার ও ইফতার করালে এক এক রোযার সাওয়াব বৃদ্ধি এবং জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি লাভ হয়। এসব কিছু আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল (সা.)এর সিদ্ধান্ত, যেটা অনুসরণ করা সকল মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। আর এসব অমান্য করা আল্লাহ তাআলা এবং তার রাসূল (সা.) এর অবাধ্যতার শামিল।

তিনি বলেন, বিদ্যমান করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে দেশব্যাপী মাদরাসাসমূহ বন্ধের ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি মসজিদসমূহে মুসল্লিদের উপস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এতে করে সাধারণ মুসলমানদের ওপর জামাতে নামায আদায়সহ শরীয়তের হুকুম-আহকাম আদায়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।

করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ জনস্বার্থেই নেওয়া হয়েছে বলে মনে করি। দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে নাজেরা ও হেফজখানা বন্ধ ও মসজিদে মুসল্লিদের সংখ্যা নির্ধারণ করে সরকারি বিধি জারি কোনভাবেই যৌক্তিক ও প্রত্যাশিত নয়।

কারণ প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ের আকুতি, মহামারির এমন ভয়াবহ বিপদ ও জীবনের অনিশ্চিত সময়ে তারা প্রাণভরে আল্লাহর ইবাদত করবেন। আল্লাহর ঘরে গিয়ে তওবা, ইসতিগফার, নামায, তিলাওয়াত ও কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে আর্জি পেশ করবেন এবং নিজের জন্য, জাতির জন্য ও দেশের জন্য সাহায্য চাইবেন।

তবে তাদেরকে এটি করতে না দেওয়া মানসিক নিপীড়নের শামিল। এতে আল্লাহর ক্রোধ ও মহামারির বিপদ বেড়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা বেড়ে যায়।

তাছাড়া গত দশ মাস ধরে দেশের সকল কওমি মাদ্রাসা এবং মক্তব ও হেফজখানা চালু থাকাকালীন কোন মাদ্রাসায় করোনায় মৃত্যুর সংবাদ দেখা যায়নি।

ওই চিঠিতে তিনি আরও বলেন, সারাদেশে চলমান লকডাউন পরিস্থিতিও শহর এবং গ্রাম এলাকার প্রত্যেকটি বাজার, নিত্য পণ্যের দোকান ও ব্যাংকসমূহে দীর্ঘ সময় মানুষের জনসমাগম ও উপচে পড়া ভিড় চলছে। অন্যদিকে গার্মেন্টসসহ কলকারখানা চালু রয়েছে।

অথচ আল্লাহর হুকুম ফরয নামায, জুমা, পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও তারাবীহ আদায়ের অল্প সময়ের জন্য মুসল্লিদের মসজিদে উপস্থিতির বিষয়ে কঠোরতা আরোপ ও সংখ্যা নির্ধারণ করার যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।

news24bd.tv তৌহিদ