ডেডিকেশন নিয়ে সংসার করেছি, কাজের জায়গাতেও একই রকম

ডেডিকেশন নিয়ে সংসার করেছি, কাজের জায়গাতেও একই রকম

Other

আমার বেতন বিষয়ক একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম কিছুদিন আগে। উদ্দেশ্য ছিল আমার চাকুরীদাতার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। কিন্তু দৃষ্টি আকর্ষণ এর চেষ্টা মোটামুটি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এরপরেও রাউন্ড ফিগারে একবারও বেতন পাই নাই।

 প্রতিবারই তিনশ উননব্বই, পাঁচশ ঊনষাট, ছয়শ ঊনআশি এইরকম অড ফিগারের বেতন পাচ্ছি। প্রতিবার টাকা নেয়ার সময় ম্যানেজারকে করুন মুখে জিজ্ঞেস করি, - একটা ডলার মিল করে দিলে কি হয় ?

সে চোখ বড় বড় করে উত্তর দেয় - কোম্পানি পলিসি রাখী। can’t give you the extra dollar. কোম্পানির এই রকমই আরেক পলিসি হল, কাস্টমারের কাছ থেকে কখনো ৫০ বা ১০০ ডলার নোট accept করা যাবে না। কারণ ৫০/১০০ টাকার নোট জাল হলে বিরাট লস।

 তাই লিখিত এবং কথ্য দুই ভাবেই কঠিন ডিরেকশন আছে বড় নোট না নেয়ার।

যাই হোক, আজকে বৃষ্টির মধ্যে একজন কাস্টমার এলো পিৎজা কিনতে। সে ৪১ ডলারের খাবার অর্ডার করলো এবং বিল দেবার সময় ১০০ ডলার এর একটা নোট দিল। তাকে রিকোয়েস্ট করলাম চেঞ্জ দিতে। সে বলল এই নোট ছাড়া তার কাছে কিছু নাই। দিলে দাও না দিলে মুড়ি খাও।

সহকর্মীকে ডেকে বললাম - এত বড় একটা অর্ডার হাত ছাড়া করবো? নেই ১০০ ডলার। সে ভয়ে তটস্থ হয়ে উত্তর দিলো।   না না, কোনভাবেই নেয়া যাবে না। জাল টাকা হলে আমাদের বেতন থেকে কাটা যাবে।

আমি বললাম - এমনেই ব্যবসা স্লো, তারপরে এত টাকার অর্ডার। আমি আমার রিস্কে নিব। জাল টাকা হলে আমার বেতন কাটবে। আপনি চিল করেন। তারপর নিয়ে নিলাম ফি আমানিল্লা বলে।

ইচ্ছা ছিল নোটটা আমি রেখে আমার কাছ থেকে চেঞ্জ দিয়ে আসব। কিন্তু আজকে ব্যাগে ছিল সাকুল্যে পাঁচ টাকা মানে পাঁচ ডলার।  তাই টেকনিক করে ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে বললাম - আমার ইমারজেন্সি ১০০ ডলার দরকার। বসকে বলে ধার দেন প্লিজ। আমি কালকে কাজে এসে দিয়ে দিব।

আরও পড়ুন


জলবায়ু পরিবর্তন আইন করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড

ধর্মীয় একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করছে পাকিস্তান

পাঁচ দেশের সঙ্গে বিশেষ ফ্লাইট শুরুর ঘোষণা

এ বছর ৩৬ লাখেরও বেশি দরিদ্র পরিবার পাবে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার


কিছুক্ষণ পর বসের অনুমতি পেয়ে কাস্টমারের দেয়া সেই ১০০ ডলার এর নোট নিয়ে চলে এলাম। গেলই না হয় একশ টাকা নিজের পকেট থেকে। যেদিন থেকে কাজে ঢুকেছি সেদিন থেকে এটাকে নিজের জীবনের অংশ হিসেবে কাউন্ট করেছি। যে রকম ডেডিকেশন নিয়ে সংসার করেছি কাজের জায়গাতেও সেই একই রকম ডেডিকেশন দেখিয়েছি। এই ডেডিকেশন এর পুরষ্কারে বেতন রাউন্ড না হলেও আফসোস নাই।

কারণ, কবি আমির খান বলেছেন, কাম কারতে যাও। কামিয়াবি ঝাক মারকে তুমহারা পিছা কারেগা। অর্থাৎ কর্ম করিয়া যাও। সাফল্য দৌড়াইতে দৌড়াইতে তোমাকে অনুসরণ করিবে।  

বাই দ্য ওয়ে, এই পোষ্টও আমার বস এর দৃষ্টি আকর্ষণ এর জন্যই দিলাম। দুইদিন পর দেশে চলে যাব। উনিও মনে রাখুক নিবেদিত প্রাণ এমপ্লয়ি কাহাকে বলে কত প্রকার ও কি কি......।

আমি তো আর কোম্পানি না। আমার এত কঠিন কঠিন পলিসি নাই। আমার পলিসি হচ্ছে লাইফ একটাই, তাই লাইফে প্রচ্চুর বিন্দাস থাকতে হবে। এই প্রসঙ্গে, কবি অক্ষয় কুমার বলেছেন, জো ডার গেয়া সামঝো ও মার গেয়া।  

অর্থাৎ যে জীবনে ডরাইয়াছে, তাহার আর মরনের কিছু বাকী নাই 
সে Already মরিয়া গিয়াছে......

news24bd.tv আহমেদ

সম্পর্কিত খবর