বাংলা ভাষা থেকে তুই তুলে দেওয়ার প্রস্তাব

আফসার আহমেদ

বাংলা ভাষা থেকে তুই তুলে দেওয়ার প্রস্তাব

Other

ডাক্তার কাণ্ড-১ : 'তুই' সম্বোধন বাংলা ভাষা থেকে তুলে দেওয়ার একটি প্রস্তাব।

প্রথম কথা হল, ‌'তুই' সম্বোধনটা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষা থেকে তুলে দিতে হবে আইন করে। নিজ পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য যে কাউকে 'তুই' বলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

তাহলে পর্যায়ক্রমে  'সর্বনাশা সর্বনাম' এই  'তুই' সম্বোধনটি বাংলা ভাষা থেকে চিরতরে বিদায় নেবে, এক পর্যায়ে।

শুধু তাই নয়, সরকারি কাজে তুমি সম্বোধনও তুলে দিতে হবে। সবাই সবাইকে আপনি করে বলবে।   এমন একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ আওয়ামী লীগ সরকার নিতে পারে, যা হবে আরেকটি সামাজিক মুক্তিযুদ্ধ।

কেন এই প্রস্তাব? 

প্রাচীন বাংলায় 'তুই' সম্বোধন ছিল না।

এমন কি সংস্কৃত ভাষায়ও ছিল না। আধিপত্য আরোপের জন্য তুই চালু করা হয়েছে।   সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোন থেকে তুই এমন একটি  সর্বনাম, যা সামাজিক সংহতির অন্তরায়, সামাজিক ন্যায়ের (সোশ্যাল জাস্টিস) বিরোধী এবং শ্রেণি বিভাজনের প্রকাশক।  

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাঙালির ঐক্যবিরোধী এই সর্বনাম সম্পর্কে বলেছেন, 'তুই এর মধ্যে ধিক্কার থাকে, অস্মমানের উপাদানও থাকে। তুই অবশ্য আদরের ডাকও, তবে তা কেবলই আপনজনদের ভেতরে। কিন্তু সামাজিক 'তুই' দিয়ে একটি অপদস্থ প্রাণী শূদ্রে পরিণত হয়। ... তুই দিয়ে অপমান করা, শূদ্রে পরিণত করার কর্ম (এখনও) অব্যাহত রয়েছে। তুই কেবল যে শ্রেণিদূরতের চিহ্ন তা নয়, শ্রেণি আধিপত্যের অস্ত্রও বটে।  


বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যা বললেন হেফাজত নেতারা

কবরের আজাব থেকে মুক্তি লাভের দোয়া

২০ এপ্রিল, ইতিহাসে আজকের এই দিনে

সিঙ্গাপুরগামী বিমানের বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়ছে আজ


সর্বনাম শুধু অভিধান বা ব্যাকরণের ব্যাপার নয়, সমাজেরও সরঞ্জাম বটে, এমন কি অস্ত্র। ' (সূত্র : বাঙালীর  জাতীয়তাবাদ, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী; উদ্ধৃত অংশটি সংক্ষেপিত)।

সুতরাং মানুষকে তুচ্ছ করতে আমরা তুই ব্যবহার করি বটে। কিন্তু তুই মোটেও তুচ্ছ বা ছোটখাটো কোনো সম্বোধন বা সর্বনাম  নয়। তুই একটি ভয়ঙ্কর হাতিয়ার। সমাজে এমন কোনো প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ নেই যারা তুচ্ছার্থে তুই সম্বোধনের শিকার হন না। বাটে পড়লে উচ্চ শ্রেণির লোকেরাও 'তুই' সম্বোধনের শিকার হন। তবে এই বাটে পড়া নিয়ে মজা পাওয়ার সুযোগ নেই। সাম্য চাইতে গেলে 'তুই' কে রাখা  চলে না।

news24bd.tv নাজিম