আমরা সামান‍্য একটা যৌক্তিক তর্ক থেকে মানুষের কুৎসা রটানো শুরু করি

আমরা সামান‍্য একটা যৌক্তিক তর্ক থেকে মানুষের কুৎসা রটানো শুরু করি

Other

দুইটা ঘটনা, 
মারসিন ক‍্যালেক ছিলো আমার সিনিয়র কলিগ। ওর যখন পিএইচডি শেষ, আমি তখন শুরু করেছিলাম। পোলান্ডের ছেলে। আন্তর্জাতিক ক‍েমেস্ট্রি অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক জয়ী।

একটা পিএইচডি কোর্সে, প্রফেসর ফাহমি হিমুর ক্লাসে, মারিসন ক‍্যালেক প্রচণ্ড তর্কে জড়িয়ে যায়। পাঠের একটা বিষয় নিয়ে। তর্ক, পাল্টা তর্ক চলে। তার কিছুদিন পর দেখি, মারসিন ক‍্যালেক সেই প্রফেসরের গ্রুপে পোস্টডক হিসেবে জয়েন করছে।
 

করোনা শুরু হওয়ার আগে, একদিন গ্রুপ মিটিং চলছে। আমার এক সিনিয়র কলিগ আমার প্রেজেন্টেশনের সময় ডিফেন্ড করার চেষ্টা করে। আমি ছাড় না দিয়ে ডিফেন্ড করতেই থাকি। পরিবেশ উত্তাপ ছড়ায়। আমার বস (ভাইস প্রেসিডেন্ট) আমাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমার সাথে সেই কলিগের কোন দ্বন্দ্ব আছে নাকি। আমি বলেছি, না। আমি তো আমার কাজকে ডিফেন্ড করেছি মাত্র। ব‍্যক্তিগত কোন সমস‍্যা নেই।  

তার কিছুদিন পর (গত বছরের মার্চে) আমাকে সিনিয়র সাইন্টিস্ট হিসেবে প্রমোশন দেয়া হয় ইউথ এন ইন্টারনাল এওয়ার্ড! (আমি যেহেতু বাঙালী সংস্কৃতি থেকে এসেছি, আমি অবশ‍্য একটু চিন্তায় ছিলাম যে এই ঘটনা কোন ইমপ‍্যাক্ট ফেলবে কিনা)।  

এই রকম বহু তর্ক, বহু বিষয়ে দ্বিমত দেখেছি। করেছি। কিন্তু কখনো এগুলোকে ব‍্যাক্তিগত ক্রোধ, ঘৃণার পর্যায়ে নিতে দেখিনি। নিজেও নেইনি। আর যেহেতু, বিজ্ঞান গবেষণা করি, সেহেতু এই ফিল্ডে এটা আরো বেশি প্রয়োজন। দ্বিমত না থাকলে কোন সৃষ্টি হয় না। দ্বিধা না থাকলে সৃষ্টিশীল হওয়া যায় না।  

কিন্তু আমাদের অসংখ‍্য মানুষ, দ্বিমত পোষণ না করে সরাসরি এসে অশ্রাব‍্য ভাষায় মন্তব‍্য করা শুরু করবে। আপনাকে ব‍্যক্তিগতভাবে আক্রমন করবে। বিষয়ের প্রসঙ্গে না থেকে অবান্তর বিষয় নিয়ে প‍্যাঁচাল শুরু করবে। আমরা সামান‍্য একটা যৌক্তিক তর্ক থেকে মানুষের কুৎসা রটানো শুরু করি। খুবই তুচ্ছ একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে দূরত্ব তৈরি করি। অনেক যৌক্তিক বিষয় অনেক সময় লিখিনা বা এড়িয়ে যাই শুধু এইসব ব‍্যক্তিগত আক্রমনের ভয়ে।

রউফুল আলম, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।

news24bd.tv/আলী