মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ভয়াবহ পরিস্থতি ভারতে। করোনায় মৃতদের দেহ নিয়েও লম্বা লাইন। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মানুষ যেন সব থেকে অসহায়।
অথচ গত নভেম্বরেই বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছিলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণের আরও মারাত্মক দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে চলেছে।
ওই সতর্কবার্তা সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত উন্নতির দিকে কেন্দ্রের মনোযোগ না দেওয়ায় এখন দেশবাসীকে খেসারত দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যত শূন্য থেকে লড়াই শুরু করলেও নরেন্দ্র মোদি সরকারের হাতে এক বছরের বেশি সময় ছিল। কিন্তু ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠী সংক্রমণের ওপরে সরকারের ভরসা এবং অতিরিক্ত প্রতিষেধক নির্ভরতার কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে গেছে।
তারা বলছেন, গত নভেম্বর থেকে যখন সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছিল, তখন জনতা যেমন কোভিড সতর্কবিধি মেনে চলা ছেড়ে দেয়, তেমনই গা-ছাড়া মনোভাব দেখা যায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও।
আনন্দবাজার জানায়, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও গত নভেম্বরে নিজেদের রিপোর্টে কেন্দ্রকে একাধিক সুপারিশ করেছিল। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনযুক্ত শয্যা, আইসিইউ শয্যা, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। সে জন্য স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছিল। বড় হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোতে নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ
ইসরায়েলে করোনায় দৈনিক মৃত্যু নেমে এসেছে শূন্যে
ভারতে অক্সিজেন সংকট, পাশে দাঁড়াল সৌদি আরব
মজার ছলে করোনা ছড়িয়ে বেড়ানোর দায়ে একজন গ্রেপ্তার!
গত বছর দেশটিতে করোনার সংক্রমণ কমে আসার পরে বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর বৈঠকও কমে যায়। এই বছরের গোড়ায় বিজ্ঞানীদের করোনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের একটি মাত্র বৈঠক হয়েছে। এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সরকারের কোভিড সংক্রান্ত পরামর্শদাতা গোষ্ঠীর অনেকেই ‘হার্ড ইমিউনিটি’ নীতির পক্ষে ছিলেন।
তাদের যুক্তি ছিল, এ ধরনের সংক্রমণ জনগোষ্ঠীতে ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত তা সাধারণ রোগে পরিণত হবে না। তাই প্রবীণদের প্রতিষেধকের আওতায় আনা হোক, যাতে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু কমে যায়। কিন্তু ব্রিটেন ও সুইডেনের মতো ভারতের এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা মনে করেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা যদি কয়েক মাস পরে শুরু হত, পরিকল্পনা অনুযায়ী তার আগে যদি প্রথম ৩০ কোটি দেশবাসীকে টিকার দুটি ডোজ় দেওয়া সম্ভব হতো, তাহলে সংক্রমণের চিত্র এতটা খারাপ হতো না।
news24bd.tv / নকিব