স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার উপরই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল: শওগাত আলী সাগর

স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার উপরই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল: শওগাত আলী সাগর

অনলাইন ডেস্ক

দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩০৬ জন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ভাইরাসটির অবস্থা আরও ভয়াবহ। দেশটিতে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। হঠাৎ যেন বিশ্বরেকর্ড ভাঙাগড়ার খেলায় মেতেছে ভারত। গত সপ্তাহে বিশ্বে প্রথমবারের মতো একদিনে তিন লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছিল সেখানে।

ভাইরাসটি নিয়ে কানাডা থেকে প্রকাশিত নতুনদেশ’র প্রধান সম্পাদক, শওগাত আলী সাগর লিখেছেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত না একটি জনপদের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার উপরই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। সামজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা লেখেন। News24bd.tv এর পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো। তিনি লিখেছেন:

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ভারত যে হিমসিম খাচ্ছে এটা মোটেও তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতা নয়। তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা ঠিকই আছে, সমস্যা হচ্ছে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায়, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়। ঠিক এই সমস্যাটাই হয়েছিলো নিউইয়র্কে, ইতালীতে, অন্যান্য দেশে।

সহজ করে বলি। আপনার বড়িতে ১০ জন অতিথিকে জায়গা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনার বাড়িতে যদি ১৫ জন অতিথি এসে হাজির হয় আপনি সামলাতে পারবেন। কিন্তু ২০ জন ৩০ জন, একশত জন অতিথি এলে? তার মধ্যে নারী, পুরুষ থাকলে? বয়স্ক লোক থাকলে? আলাদা বিছানা দিতেই হয় এমন কেউ থাকলে? ভারত, ইতালী বা নিউ্য়র্কের ঠিক এই অবস্থাই হয়েছিলো। কথাটা আবারো বলি, কোনো দেশেই  হাসপাতালে হাজার হাজার আইসিইইউ থাকে না। হাজার হাজার লোকের অক্সিজেন ব্যবস্থা থাকে না। একটা দেশে স্বাভাবিক অবস্থায় কতোজন লোকের অক্সিজেন বা আইসিইইউ  দরকার হতে পারে তার একটা হিসাব করে এইসব ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু হিসাবটা উল্টে গেলেই যতো সমস্যা। ভারতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায়, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হিসাবটা উল্টে গেছে। সংক্রমণ ছড়ানো বন্ধ করা না গেলে প্রত্যেকটি দেশকেই একই পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হবে।

আর এই কারণেই দেশে দেশে আইসোলেশনের মাধ্যমে লকডাউনের মাধ্যমে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। করোনার যেহেতু এখন পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনো চিকিৎসা নেই, সবদেশই সংক্রমণ ঠেকাতে চেষ্টা করে যাতে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর চাপ না পরে, স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরা যাতে ক্লান্ত হয়ে না পরেন। জীবন জীবিকার বিতর্ক তুলে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য উসকে দেওয়া যায়, তাতে আখেরে মানুষের উপকার হয় না।

যতোক্ষণ পর্যন্ত না একটি জনপদের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার উপরই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল।

শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ, কানাডা।

সম্পর্কিত খবর