তিন মামলায় কারাগারে মুফতি হারুন ইজাহার, রিমান্ডের আবেদন

তিন মামলায় কারাগারে মুফতি হারুন ইজাহার, রিমান্ডের আবেদন

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ৩টি সহিংসতার মামলায় হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতি হারুন ইজাহার (৪৭) ও তার সহযোগী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মুফতি হারুন ইজহার ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজাহারুল ইসলামের ছেলে।

বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরার আদালতে হাজির করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির  বলেন, হাটহাজারী থানার তিন মামলায় ইজাহারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পরে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। আরেকজনকে দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হারুন ইজাহারের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার শুনানি হতে পারে।

হারুন ইজাহারকে গ্রেপ্তার দেখানো তিনটি মামলা হলো হেফাজতে ইসলামের আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীর গত বছরের সেপ্টেম্বরে করা মারধরের মামলা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশের করা দুই মামলা। গোলাম রব্বানীকে ভাঙচুরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বুধবার রাতে ইজাহার ও রব্বানীকে নগরের লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে আটকের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যাব বলছে, হাটহাজারীর সহিংসতার ঘটনার ‘মদদদাতা’ ইজাহার।

সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হলেও চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো সংগঠনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হলেন। হাটহাজারী ও পটিয়া থানায় হওয়া মামলায় এ পর্যন্ত ৪০ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে আটকের পর হারুনকে নগরের পতেঙ্গা র‍্যাব-৭ কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব। বিকেলে তাকে র‍্যাব কার্যালয় থেকে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর আদালতে আনা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার মাদ্রাসায় হ্যান্ডগ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিনজন মারা যান এবং পাঁচজন আহত হন। পরে পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে চারটি তাজা গ্রেনেড, ১৮ বোতল অ্যাসিড এবং গ্রেনেড তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন হারুন ইজহার।

এ ঘটনায় ৩টি ও হেফাজতের নাশকতার ৮ মামলাসহ মোট ১১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে হারুন ইজহারের বিরুদ্ধে। এছাড়া রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতের লংমার্চের সময় সংঘর্ষ ও নাশকতার ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলায়ও তিনি আসামি। তার পিতা ইজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও মামলা বিচারাধীন।

এছাড়া ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে কানেকশনের অভিযোগে একবার মুফতি হারুন ইজহার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়া লস্কর-ই-তৈয়বার দুই জঙ্গি নাজের ওরফে নাজের পারবন এবং শফিক ওরফে সাহাফাজ শামসুদ্দিন পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে মুফতি হারুনের কয়েক দফা বৈঠক হয়। তারা মার্কিন ও ভারতীয় দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। হারুন ইজাহার বিস্ফোরক মামলায়ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হন। পরে জামিনে মুক্তি পান। ওই মামলায় তার বাবা মুফতি ইজাহারও আসামি। এটি বিচারাধীন।

news24bd.tv/আলী