তারা গোটা কোভিডকে নিয়ে ব্যবসা করেছে: ফখরুল

তারা গোটা কোভিডকে নিয়ে ব্যবসা করেছে: ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা আমাদের অধিকারগুলোকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের যে অধিকারগুলোকে আজ এই ফ্যাসিস্ট সরকার সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রের দানব শক্তি ব্যবহার করে কেড়ে নিয়েছে, সেই শক্তিকে সরিয়ে আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এজন্যই এত ত্যাগ, এত অশ্রু, এত ব্যথা, এত বেদনা। আমরা প্রায় প্রত্যেক বছর আপনাদের সামনে যখন এভাবে উপস্থিত হই, নিজেদেরকে মাঝে মাঝে খুব অপরাধী মনে হয়।

‘অপরাধী মনে হয় এজন্য যে- আমরা এখন পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন করতে পারিনি। একটি ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শক্তি আমাদের সব অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে, মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালবাসা ছিল সেটা নষ্ট করে দিয়ে, আমাদের স্বপ্নগুলোকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে একটা দানবীয় শক্তি হয়ে আমাদের ওপর তাণ্ডব নৃত্য করছে। এটাই বাস্তবতা। ’

এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রতিবছর আমাদের আবেগ-আপ্লুত করে জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা যখন আমাদের সামনে এই পরিবারের সদস্যদের দেখতে পাই, যারা তাদের সন্তান, ভাই বা স্বামীর ছবি নিয়ে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন, এটা আমাদের ভারাক্রান্ত করে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব বিগত ছয়-সাত বছর ধরেই এই পরিবারগুলোকে চিহ্নিত করেছেন, তাদের তালিকা তৈরি করেছেন এবং আমাদের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় বিএনপি তাদের কাছে ঈদের আগে যৎসামান্য কিছু উপহার-সামগ্রী প্রদান করেছে।

‘এত মানুষকে যে প্রাণ দিতে হয়েছে, এত তরুণদেরকে যে চলে যেতে হয়েছে, অবশ্যই সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। যারা গুম হয়েছে, নিখোঁজ হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে তাদেরকে জবাব দিতে হবে, পুরো জাতির কাছে জবাব দিতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসে দেখেছি, বিভিন্ন সময়ে যেসব সরকার বিচার করে ক্ষমতায় থাকে তাদের এসব কৌশল নিতে হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। কেননা জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকে না। যেহেতু তারা গণবিচ্ছিন্ন সে কারণে তাদেরকে এই অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যা-গুম করে টিকে থাকতে হয়। এটা আজকের বিষয় নয়। ’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সব সময় একটা কথা মনে রাখতে হবে- আমরা যে লড়াই করছি, যুদ্ধ করছি, সংগ্রাম করছি, এটা আমরা রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে করছি। রাষ্ট্রযন্ত্র এই রাষ্ট্রকে আজ দখল করে ফেলেছে। প্রশাসন, মিডিয়া, ইলেকশন কমিশন, পার্লামেন্ট সব কিছু দখল করেছে, এটাই তাদের চরিত্র। এটা আমাদের ভাঙতে হবে। অবশ্যই আমরা তাদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো। এই রক্তের ধারা কখনো বৃথা যেতে পারে না। আমরা অবশ্যই বিজয়ী হবো। ’

তিনি বলেন, ‘আজ দেখুন দেশের কী অবস্থা। আজ আরেকটা দানবীয় শক্তি করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে। এটা ছোটখাটো বিষয় নয়। মানুষ পথ খুঁজে পাচ্ছে না। বড় বড় বিজ্ঞানীরা চূড়ান্তভাবে বলতে পারছে না, কোনটা সঠিক ভ্যাকসিন কোনটা না। আজকে এই সরকার কী করেছে? যেহেতু তাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নেই, যেহেতু তাদের কখনোই কোনো জবাব দিতে হয় না কারো কাছে, তারা গোটা কোভিডকে নিয়ে ব্যবসা করেছে। জনগণ হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছে একটা আইসিউ পায় না। দেড় বছর ধরে এই অবস্থা চলছে, তারা এদিকে লক্ষ্য রাখেনি। শুধু কী করে টাকা বানানো যাবে, কী করে দুর্নীতি করা যাবে তারা সেই কাজ করেছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ চতুর্দিকে তাকিয়ে দেখবেন যে, সরকার বলতে কিছু নেই। প্রশাসন বলতে কিছু নেই। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। আজকের পত্রিকায় দেখলাম- ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি তিন মাসের ছুটি নিয়ে আমেরিকা গেছেন। যখন দেশে এ ধরনের একটা ক্রাইসিস, যখন গরম ও কোভিডের মধ্যে মানুষের জীবন কাহিল অবস্থা, সেই সময়ে তিনি আমেরিকায় গিয়ে সেখান থেকে অফিস চালাবেন!’