হাইকোর্টে মায়ের মামলার বিচার...

তারিক শামমি

হাইকোর্টে মায়ের মামলার বিচার...

Other

একটা মামলার ঘটনা বলি। চাঁদপুর জেলায় এক বৃদ্ধা মা তার ছেলেকে সব সম্পত্তি দান করে দেন। এরপর ছেলে আর ছেলের বউ মিলে বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। বৃদ্ধা মা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে।

ভিক্ষা করে খায়। যেখানে সেখানে ঘুমায়।  

এক আইনজীবী ঘটনাক্রমে সব শুনে স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখল ও দলিল বাতিলের মোকাদ্দমা দায়ের করেন। মা স্বেচ্ছায় সম্পত্তি দান করেছেন।

সাক্ষ্যতেও তাই বললেন।  ট্রায়াল কোর্টে মা হেরে গেল। জেলা জজ কোর্টে আপিল করলো মা। আপিলেও মা হারলো।  

এবার হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন দায়ের হলো। দুই কোর্ট হারা খুব খারাপ মামলা। মোশন শুনানি। মামলা ডাকা হলো। সিভিল রিভিশন। জাজমেন্ট অফ এফারর্মেন্স। ল পয়েন্ট নাই। বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা মামলা খারিজ করে দিতে উদ্যত হলেন। মা এর পক্ষের আইনজীবী অনেক অনুনয় বিনয়ের পর বিচারপতিকে ট্রায়াল কোর্টের রায়ের একটা অংশ পড়ে শোনানোর সুযোগ পেলেন-

"তাহার সকরুণ বদনখানি, রিক্ত শূন্য খোলা দৃষ্টি, শীর্ণ দেহখানি ও জীর্ণ মলিন পোশাক পরিচ্ছদ দেখিয়া যেকোন বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ তাহাকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত বলিয়া পরিগণণা করিবে এবং তাহার পেট প্রায় পিঠের সহিত মিলিয়া যাওয়া যেন দীর্ঘদিন অভূক্ত থাকার কথাই বিবৃত করে। তথাপি সাক্ষ্য-প্রমাণ  হইতে ইহা স্পষ্ট যে,  বাদীনি সজ্ঞানে স্বেচ্ছায়........"

তারপর আইনজীবী বললেন, সব সম্পত্তি পেয়ে ছেলে বাড়ি থেকে বৃদ্ধা মাকে বের করে দেয়।


যাত্রীদের চাপ সামলাতে সব ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়েন

অবশেষে করোনামুক্ত হলেন খালেদা জিয়া

পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে চীনা রকেট, দেখা যাচ্ছে লাইভে

কাবুলে স্কুলের পাশে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ৫৫


বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা গালে হাত রেখে মাথা নিচু করে বসে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর রুল ইস্যু করলেন এবং সংশ্লিষ্ট থানাকে ১৫ দিনের মধ্যে মাকে বাড়ির দখল বুঝিয়ে দিয়ে কোর্টকে ইনফর্ম করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দিলেন। পরে মৌখিক ভাবে মা'র পক্ষের আইনজীবীকে মামলা শুনানির জন্য অপরপক্ষ ফিক্স করতে এলে 'মায়ের মামলা' বলে মনে করিয়ে দিতে বললেন আর সত্তোরোর্ধ মা মৃত্যুবরণ করার পর ইনফর্ম করতে বললেন।

ছেলে তার পক্ষে বড় আইনজীবী মিঃ শুধাংসু শেখর হালদারকে নিয়োগ করে। মিঃ হালদার অনেক চেষ্টা করলেও বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা মামলা শুনানির জন্য ফিক্স করেননি। প্রায় তিন/চার বছর পর মায়ের মৃত্যুর পর বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা শুনানি অন্তে সিভিল রিভিশনের রুল ডিসচার্জ করে ছেলের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জিতে যান মমতাময়ী মা, মানবতা ও ন্যায়বিচার।

(পুনশ্চ: মামলার ঘটনাটি প্রিয় বড় ভাই অ্যাডভোকেট Ziaul Hoque থেকে অনেক আগে শোনা। )

তারিক শামমি
মা দিবস

news24bd.tv নাজিম

এই রকম আরও টপিক