বিশ্বের বৃহত্তম আনারসের কথা

বিশ্বের বৃহত্তম আনারসের কথা

Other

দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপের ব্যাটহার্স্ট জেলা আনারস চাষের জন্য সুপরিচিত। এখানকার সামারহিল খামারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আনারসটি অবস্থিত। ১৬.৭ মিটার বা ৫৫ ফুট উঁচু আনারসটি এ অঞ্চলের আনারস চাষের ঐতিহ্য ও গৌরব তুলে ধরার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পর্যটক আকর্ষষণ করে থাকে।  

ব্যাটহার্স্ট এলাকার ইতিহাস বেশ পুরানো।

সেই ১৮২০ সালের কথা। এখানে বিটেন থেকে আসা কৃষকরা বসতি স্থাপন করেন। কয়েক দশক ধরে নানা ফসল চাষ করেও সাফল্যের মুখ দেখছিলেন না তারা। অবশেষে ১৮৬৫ সালে প্রথম আনারস চাষ করে তাদের ভাগ্য খুলে যায়।

সেই সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে শতাব্দীরও বেশি সময় পথ চলার পর ১৯৮০’র দশকে ব্যাটহার্স্টের কৃষক সমাজের সদস্যরা এ অঞ্চলের আনারস শিল্পকে আরও বেশি পরিচিতি দিতে এবং এই রসালো ও সুমিষ্ট ফলের সুনাম তুলে ধরতে সামারহিল খামারে একটি বিশাল আনারস-সৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।  

পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে অবস্থিত বৃহত্তম আনারসটির ভবন-নকশা কেনার উদ্যোগ নিতে পরিদর্শনের জন্য সেখানে দু’জন প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। অনুদান ও একটি সরকারি তহবিলও যোগাড় হয়। কুইন্সল্যান্ডের ১৬ মিটার বা ৫২ ফুট উঁচু আনারসটির নকশা করেন পেডল থ্রপ ও হার্ভে, পল লাফ, এবং গেরি স্মলকম্বে এন্ড অ্যাসোসিয়েটস। এটি ১৯৭১ সালে নির্মাণ করা হয়।

সফর সফল হয়। প্রতিনিধিরা ফিরে আসার পর ১৯৯০ সালে ব্যাটহার্স্টের বিশাল আনারসটির নির্মাণ শুরু হয়। স্টিল ও কংক্রিটের কাঠামোর ওপর ফাইবার গ্লাসের আবরণ দিয়ে নির্মাণ করা হয় এটি। টানা ১২ মাস ধরে পরিশ্রমের পর এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।  

আনারসটি অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের বিগ পাইনাপেলের প্রতিরূপ হলেও এটি প্রায় ৩ ফুট উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও উঁচু আনারসের তকমা পায়। এছাড়া কুইন্সল্রান্ডের আনারস ভবনে রয়েছে দু’টি তলা, আর সামারহিলের আনারসটিতে রয়েছে তিনটি তলা।
 
ভবনটির প্রথম তলায় রয়েছে একটি গিফট শপ। এখানে আনারস ও আনারস থেকে তৈরি নানা খাদ্য সামগ্রী এবং আনারস থিমের টি-শার্ট, ব্যাাগ ইত্যাদি সুভেনির কিনতে পাওয়া যায়। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে একটি মিউজিয়াম, যেখানে পর্যটকদের তথ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ‘আনারস কাহিনি’ প্রদর্শন করা হয়।

তৃতীয় তলায় আনারস চাষ ও এর ইতিহাস সম্পর্কে বিরতিহীন ও ধারাবাহিকভাবে ভিডিও উপস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়। এর পর রয়েছে ভবনের শীর্ষে পর্যবেক্ষণ ডেক। এখান থেকে চারপাশের চাষের জমির ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এমনকি পরিচ্ছন্ন আবহাওয়ায় এখানকার অবারিত বিস্তীর্ণ ক্ষেতের ওপর দিয়ে দৃষ্ট চলে যায় সুদূর ভারত মহাসাগর পর্যন্ত।

news24bd.tv / কামরুল