রাষ্ট্রের বেতনভুক কর্মচারীরা রাষ্ট্রকাঠামো নড়বড়ে করতে পারে না

রাষ্ট্রের বেতনভুক কর্মচারীরা রাষ্ট্রকাঠামো নড়বড়ে করতে পারে না

Other

ফেসবুকে ভেসে বেড়ানো সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের আক্রান্ত হওয়ার ভিডিও গুলো দেখতে দেখতেই মনে পড়ে গেলো যে, গলা চেপে ধরা প্রাথমিকভাবে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩২৩ ধারার আঘাত করা ও ৩০৭ ধারার  হত্যাপ্রচেষ্টা'র অপরাধ। মোবাইল নিয়ে ফেলা ৩৭৯ ধারার  চুরি এবং ঘরে আটকে রাখা ৩৪২ ধারার বেআইনি আটকের অপরাধ।

৩২৩ ও ৩৪২ ধারার শাস্তি হলো- ০১ বছর করে জেল বা ১০০০ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।
৩৭৯ ধারায় ০৩ বছর জেল বা ১০,০০০ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় সাজা।

আর ৩০৭ এ ১০ বছর সাজাসহ অর্থদণ্ডের বিধান আছে। এর মাঝে ৩৭৯ ও ৩০৭ ধারা জামিনযোগ্য নয়।

নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (১) ধারা অনুসারে নির্যাতনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেও কমপক্ষে ০৫ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের সাজাসহ এর অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

রাষ্ট্রের বাঁধন আলগা করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের অধিবাসীদের থাকতে পারে তাত্ত্বিকভাবে হলেও।

কারণ, নাগরিকেরা সম্মিলিতভাবে চাইলে রাষ্ট্রের প্রকৃতি (ফেডারেল না এককেন্দ্রিক, সমাজতান্ত্রিক না পুঁজিতান্ত্রিক ইত্যাদি) বা সরকারের ধরন (সংসদীয় না রাষ্ট্রপতি শাসিত, রাজতন্ত্র না একনায়কতান্ত্রিক) বদলাতে পারেন। কিন্তু, রাষ্ট্রের বেতনভুক কর্মচারীরা রাষ্ট্রকাঠামো নড়বড়ে করতে পারে না।

এমন কিছুও করতে পারে না, যাতে রাষ্ট্র নড়বড়ে হয়ে উঠে, নাগরিকদের আস্থা টলমল করে উঠে।
সাংবিধানিক কাঠামোকে বাঁকিয়ে-চুড়িয়ে দুমড়ে-মুচড়ে চিড়েচেপটা করতে উদ্যত হতেও পারবেন- না, হে কর্মচারী!

মিল্লাত হোসেন, বিচারক