বন্ধ করে দিন, ঝামেলা চুকে যাবে

বন্ধ করে দিন, ঝামেলা চুকে যাবে

অনলাইন ডেস্ক

অনুমতি ছাড়া করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় বইছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, বিষয়টির দিকে তারা নজর রাখছে। এটি স্পষ্টতই উদ্বেগের বিষয়।

প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ), ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন সংগঠন। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক শামীম আহমেদ।

News24bd.tv এর পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

তিনি লিখেছেন- সংবাদপত্রকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

নিশ্চয়ই শুধু গুণকীর্তন করার জন্য এটা বলা হয় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন চোরের হাতে হাতকড়া পরায়, সংবাদপত্র তেমন চোরের মুখোশ উন্মোচিত করে জাতির সামনে।

চুরির তথ্য নিশ্চয়ই কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে দেয় না। তাহলে তো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বলতে কিছুই দরকার ছিল না। শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো ভালো ভালো কথা প্রকাশ করা নিশ্চয়ই গণমাধ্যমের কাজ নয়। তাহলে তো সরকারও বুঝতো না, তলে তলে কারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুটেপুটে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে আর সরকারকে দেউলিয়া বানাচ্ছে।

রাষ্ট্রের সীমিত সম্পদের অপচয়/চুরি ঠেকাতে, অপরাধীর মুখোশ উন্মোচিত করতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গণমাধ্যমকর্মীরা। অনেক সময় গোয়েন্দা হয়ে উঠতে হয়। এজন্য সাংবাদিককে জীবনও দিতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে রাষ্ট্রের এই চতুর্থ স্তম্ভ টিকিয়ে রাখতে শক্ত কোন আইনি ঢাল আছে কি? সাংবাদিককে পেশাগত দায়িত্বে বাঁধা দিলে, তাকে হেনস্থা করলে, তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দিলে ওই সাংবাদিকের পক্ষে কী কোন আইনি প্রতিকার রয়েছে? তার দ্রুত জামিনের কোন ব্যবস্থা আছে কি? যিনি এই ঘটনাগুলো ঘটালেন তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দেওয়ার সুযোগ আছে কি? পাল্টা মামলা দিলে তাৎক্ষণিক তাকে গ্রেফতার করা হবে কি? যদি তেমন ব্যবস্থা না থাকে, যদি তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে একজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে হেনস্থা হতে হয়, মামলা খেতে হয়, জেলে যেতে হয়, তাহলে নামকাওয়াস্তে এই পেশাটা রাখার কোন যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না। এক কথায় বললে, ‌'বন্ধ করে দিন, ঝামেলা চুকে যাবে।

প্রসঙ্গত, নথির ছবি তোলায় শিশু সন্তানকে বাসায় রেখে এখন কারাগারে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। কী ছিল ওই নথিতে? তথ্য অধিকার আইনে ওই নথির ব্যাপারে জানতে চাইলে কি হতো? প্রশ্ন আর কৌতুহল বাড়ছেই।

লেখক- সিনিয়র সাংবাদিক

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর