নারদকাণ্ড: এবার মামলার আসামি মমতা

নারদকাণ্ড: এবার মামলার আসামি মমতা

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গে চাঞ্চল্যকর নারদ দুর্নীতি মামলায় আসামির তালিকায় এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম যুক্ত করেছে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ও লোকসভায় তৃণমূলের এমপি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আজ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আদালতে মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য কোনো রাজ্যে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।

আবেদনের পক্ষে যুক্তি হিসেবে সিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে এই মামলার বিচারকাজ চললে তাতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা আছে। আবেদনে মামলায় গ্রেফতার দুই মন্ত্রীসহ চার তৃণমূল নেতার কারা হেফাজত বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছেন তারা।

এর আগে সোমবার নারদ মামলার আসামি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের নগর উন্নয়ন ও পৌরসভা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক (বিধানসভার সদস্য) মদন মিত্র ও বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই।

তাদের গ্রেফতারের এক ঘণ্টার মধ্যেই সিবিআই কার্যালয়ে যান তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা ব্যানার্জী।

গ্রেফতারের কারণ জানতে চেয়ে কথাও বলেন সিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এমনকি গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, তাহলে আমাকেও গ্রেফতার করুন। নইলে সিবিআই দফতর ছাড়বো না।

গত বছরের মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একদল নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের অর্থ গ্রহণের এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও ফুটেজ ফাঁস করে দিল্লির নারদ নিউজ ডটকম নামের একটি ওয়েব পোর্টাল।

নিউজ পোর্টালটি দাবি করে , তাদের হাতে রয়েছে এ-সংক্রান্ত ৫২ ঘণ্টার ফুটেজ। ১৪ মার্চ সেই ভিডিওটি কলকাতার রাজ্য বিজেপির কার্যালয়ে ফাঁস করে বিজেপিও।

ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-মন্ত্রীদের ঘরে ঘরে, হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। এই স্টিং অপারেশনে যাদের বিরুদ্ধে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ এসেছিল, তারা হলেন মুকুল রায় (সাবেক রেলমন্ত্রী-২০ লাখ টাকা), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (পঞ্চায়েতমন্ত্রী-৫ লাখ), সুলতান আহমেদ (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), সৌগত রায় (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), শুভেন্দু অধিকারী (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), কাকলি ঘোষ দস্তিদার (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (কলকাতার মেয়র-৪ লাখ), মদন মিত্র (সাবেক পরিবহনমন্ত্রী-৫ লাখ), ইকবাল আহমেদ (তৃণমূল সাংসদ-৫ লাখ), ফিরহাদ হাকিম (পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী-৫ লাখ) এবং মোহাম্মদ আহমেদ মির্জা (জেষ্ঠ্য পুলিশ কর্মকর্তা-৫ লাখ টাকা)।  

নারদকাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন—মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে বিজেপির ‘হেভিওয়েট’নেতা। মুকুল রায় বর্তমানে সর্বভারতীয় বিজেপির সহসভাপতি এবং শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা।

তবে দু’জনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আইনী ব্যবস্থা নেয়নি সিবিআই। এদের বিরুদ্ধে আদৌ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া তবে কী না, সে ব্যাপারেও কিছু বলতে অপারগতা জানিয়েছেন সিবিআই কর্মকর্তারা।

news24bd.tv/আলী