সাংবাদিকদের একই সাথে সংবাদ এবং সাংবাদিক দুই ভূমিকা থাকতে পারে না

সাংবাদিকদের একই সাথে সংবাদ এবং সাংবাদিক দুই ভূমিকা থাকতে পারে না

Other

১. সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য সম্বলিত বিজ্ঞাপন পত্রিকাগুলোর ছাপা ঠিক হয়েছে কী না তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। আমি মনে করি, এই বিজ্ঞাপন ছেপে পত্রিকাগুলো ঠিক করেছে, কোনো অন্যায় করেনি।

সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা যে বক্তব্যগুলো দিতে চেয়েছিলো, সেই বক্তব্যটি তারা বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচার করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি বিজ্ঞাপন না দিয়ে বিজ্ঞপ্তি হিসেবে ছাপার জন্য পাঠাতো, তা হলেও সেটি ছাপা সঠিক কাজ হতো না, ছাপাটা বরং অন্যায় হতো।

 

২. চিকিৎসা, আইন পেশার মতোই সাংবাদিকতা ভিন্নরকমের এবং স্পর্শকাতর পেশা। কর্তব্যরত অবস্থায় কোনো চিকিৎসক নাজেহাল হলে, চিকিৎসকরা যখন ধর্মঘটের ডাক দেন, আমরা কিন্তু তার বিরোধীতা করি। কোনো দৃর্বৃত্ত কোনো চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করতে গিয়ে আহত হলেও আরেকজন চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দেন, সেবা দিয়ে সারিয়ে তুলেন। ‘একজন ডাক্তারকে মেরেছে কাজেই আমি তার চিকিৎসা করবো না - এমন কথা কোনো ডাক্তারই বলেন না, বলতে পারেন না।

সাংবাদিকতাও তাই।

৩. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিং বয়কটের সিদ্ধান্তকে আমি সমর্থন করিনি। আমার মনে হয়েছে, প্রেস কনফারেন্সে গিয়ে তাদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে জবাবদিহির মুখোমুখি করাটাই হতো সত্যিকারের সাংবাদিকতা। এ নিয়ে আমি ফেসবুকে লিখিনি। কিন্তু কানাডার একটি প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে এই কথাগুলো আমি বলেছিলাম। যে আবেগে সাংবাদিকরা প্রেস কনফারেন্স বর্জন করেছেন, সেই আবেগকে আমি সম্মান করি। একই সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে চাই- সাংবাদিকতা করার সময় ব্যক্তিগত আবেগকে পাশ কাটাতে হয়।

আপনি যখনি সংবাদ সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিলেন, তখন আপনি নিজেই সংবাদ হয়ে গেলেন। একজন সাংবাদিক একই সাথে সংবাদ এবং সাংবাদিক- দুই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন না। হওয়া উচিৎ না। এতে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট হয়।

আরও পড়ুন

  মক্কার সাওর পর্বতে যে ৩ অলৌকিক ঘটনা বিশ্বনবীর

  সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে যে বিষয়ে দুনিয়াতেই সুফল পাবেন

  হেফাজতের শীর্ষ নেতার সম্পদের খোঁজে দুদক

  গাজায় হামলা চলবে বাইডেনকে নেতানিয়াহু

 

৪. বর্তমান ঘটনায় সাংবাদিক এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুটি পক্ষ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা আন্দোলন করবেন। তাই বলে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ পাবে না - সেটা ন্যায়নিষ্ঠ সাংবাদিকতা না।

৫. আরেকটা কথা বলি। নিকট অতীতে কোনো ইস্যূতে সাংবাদিকদের এমন ঐক্য গড়ে উঠেনি। এই ঐক্য অবস্থান নষ্ট করার জন্য নানা মহলই নানাভাবে চেষ্টা করবে। ফলে বিজ্ঞাপন, ইউনিয়ন, ইউনিয়নের নেতৃত্ব, কোনো হাউজ বা নিজেদের কোনো গ্রুপ নিয়ে এমন মন্তব্য করা ঠিক হবে না - যেটি নিজেদের মধ্যে বিভদকে উসকে দেয়।

মাথায় রাখা দরকার, বর্তমানের আন্দোলনটা কেবলমাত্র একজন রোজিনাকে মুক্ত করা না করা বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আন্দোলনই নয়। বাংলাদেশের সাংবাদিকতা চলবে কী না, সাংবাদিকদরা আত্মসম্মান অক্ষুন্ন রেখে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারবে কী না, সেটি নিশ্চিত করার আন্দোলনও।

news24bd.tv আহমেদ