রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানি সংকট

রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানি সংকট

নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ৬ উপজেলায়
Other

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের আশংকাজনক হারে কমেছে পানি। এতে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের পাঁচ ইউনিটের মধ্যে চালু আছে মাত্র একটি। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট।

যা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ কম। একই অবস্থা কাপ্তাই হ্রদে নৌ পথে চলাচলেও। ভাসমান ডুবোচরের কারণে দেখা দিয়েছে নানা বিরম্বনা। এরই মধ্যে নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে রাঙামাটির ৬টি উপজেলার।

সেগুলো হচ্ছে- বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, হরিনা, লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি। অস্বাভাবিকভাবে হ্রদের পানির স্থর নিচে নামাতে তৈরি হয়েছে এ সংকট বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে পাহাড় বাসিন্দাদের মধ্যে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি টানা খড়ার কারণে দ্রুত কমেছে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানি। দীর্ঘ দিন বৃষ্টি নাহওয়ার কারণে রাঙামাটিতে শুকিয়ে গেছে খাল-বিল, ছড়া, ঝর্ণা ও নদীর পানি। এতে নানা মুখি সংকটের পড়েছে এ জেলার মানুষ। নেই খাবার পানি, দুর্গম উপজেলাগুলোতে বন্ধ লঞ্চ চলাচল। পানি স্থরকম থাকার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের চারটি ইউনিটও। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসূমে এমন দূর্ভোগের চিত্র রাঙামাটিবাসির কাছে স্বাভাবিক হলেও, এবারে কষ্টের মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুন বলছেন স্থানীয়রা।

রাঙামাটি লংগদু উপজেলার স্থানীয়বাসিন্দা শাহাদাৎ ফরাজি বলেন, দুই মাসের অধিক সময় ধরে রাঙামাটি শহরের সাথে লংগদু উপজেলায় লঞ্চ চলাচল বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রতি বছর কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে গেলে এমন সমস্যা তৈরি হয়। এতে মারাত্মক দুর্ভোগে পরতে হয় এ উপজেলার বাসিন্দাদের। কারণ রাঙামাটি শহরের সাথে লংগদু উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। নৌ পথই একমাত্র ভরসা।

রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি মঈনু উদ্দীন সেলিম জানান, বেশ কয়েক মাস আগেই রাঙামাটির সাথে দুর্গম ৬টি উপজেলার লঞ্চ চলাচল বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসূমে ভেসে উঠে হাজারো ডুবোচর। যার কারণে লঞ্চ চলাছর হুমকিতে পরে। ড্রেজিং না হওয়ার কারণে এ সমস্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু বৃষ্টি হলে পানি বৃদ্ধি নয়, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। ৬১ বছরেও ড্রেজিং না হওয়ার কারণে রাঙামাটিতে খড়াতে পানি সংকট। আর বর্ষাতে বন্যা। হবেই। দুটোতেই দুর্ভোগ। দুর্ভোগ কমাতে কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি না বাড়লে এমন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না

বলছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. এটিএম আব্দুজ্জ জাহেদ। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি-স্বল্পতার কারণে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মারাত্মক আকারে উৎপাদন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের পাঁচ ইউনিটের মধ্যে চালু আছে মাত্র একটি। পিক-আওয়ারে রেশনিং পদ্ধতিতে বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সংকট বাড়তে পাড়ে। কারণ রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকভাবে পানি থাকার কথা ৭৮পয়েন্ট ২০ মিন সী লেভেল (এমএসএল) কিন্তু বর্তমানে হ্রদে পানি আছে মাত্র ৭৪.৫৫ ফিট এম এসএল । যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর