ঠাকুরগাঁওয়ে আরও ৮শত পরিবারের মাথাঁ গোজার ঠাঁই

ঠাকুরগাঁওয়ে আরও ৮শত পরিবারের মাথাঁ গোজার ঠাঁই

Other

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অসহায়, দরিদ্র, ভূমিহীন পরিবারের জন্য ৮ ইউনিয়নে নির্মিত হচ্ছে আরও ৮শত ঘর। উপজেলা প্রশাসনের গঠিত ট্রাস্কফোর্সের কমিটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) তদারকিতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।

জুন মাসের শুরুতেই ঘরগুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হবে পরিবারগুলোকে। এতে নতুন ঘরে মাথা গোজার ঠাঁই হবে আটশত অসহায়, দরিদ্র, বিধবা ভূমিহীন পরিবারের।

প্রথম ধাপে এই উপজেলায় গৃহহীনদের ১৬৬টি ঘর দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আগে যারা ঘর পেয়েছেন প্রতিনিয়ত তাদের বাসায় গিয়ে খবর নিচ্ছেন। এছাড়াও নতুন যে ঘরগুলো নির্মান করা হচ্ছে সেগুলো সঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে কি না প্রতিদিন ১বার করে খবর নিচ্ছেন ইউএনও। নতুন ঘর নির্মানে যেন কোন প্রকার দুর্নীতি না হয় সেজন্য কাজের সম্পূর্ণ তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০টি স্থানে সরকারি জমিতে দু’মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৮’শ ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মোট ৩০টি স্থানের খাঁস জমিতে এসব গৃহ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা।

উপকারভোগী শ্যামল কুমার রায় বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর প্রথমেই পেয়েছি। এতদিন মানুষের জমিতে ঘর করে থাকতাম। নিজের কিছুই ছিল না। এখন নিজের ঘর আছে এই শক্তি আমার। ইউএনও স্যার প্রায় এসে আমাদের খবর নেন। কোন সমস্যা হচ্ছে কি না, কারেন্ট আছে কি না, কেও চাঁদা চায় নাকি এসব খবর নেন ইউএনও স্যার।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পাওয়া বিধবা খদেজা বেগম বলেন, স্বামী নাই আমার। মানুষের বাসায় থাকতে ভয় হইতো। এখন ঘর পেয়েছি শান্তিতে রাতে ঘুমাতে পারি। এখন আমার একটা ঠিকানা আছে। আমাকে ঘর দিয়েছে ইউএনও স্যার। প্রধানমন্ত্রীর উপহার উনি আমার হাতেঁ তুলে দিছেন।

আমজানখোর ইউনিয়নের আমবাগান এলাকায় নির্মানাধীন ১০০টি ঘরের কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রি রমজান আলী জানান, দক্ষ মিস্ত্রি দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণে ব্যবহৃত ইট, রড ও সিমেন্টও উন্নত মানের। প্রতিনিয়ত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন। নির্মাণ কাজে ফাঁকি অথবা অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।

উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল বলেন, ঘর নির্মাণের জন্য জমি নির্বাচন করতে গিয়ে নানা বাধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। আরও গৃহহীন রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি খাস জমিগুলো খুজে বের করে উপজেলার সকল গৃহহীনদের ঘর প্রদান করতে। এতে প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সহযোগিতা চান তিনি।   

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. যোবায়ের হোসেন বলেন, প্রথম দফায় ১৬৬টি গৃহহীন পরিবারকে এ প্রকল্পের আওতায় ঘর প্রদান করা হয়েছে। ২য় ধাপের আরও ৮’শ ঘর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী জুন মাসে প্রথম সপ্তাহে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত ট্রাক্টফোর্সের বাছাই করা গৃহ ও ভুমিহীনদের মাঝে এসব ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব ঘর উদ্বোধন করবেন।

তিনি আরও বলেন, নির্মাণ কাজ হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে। প্রতিটি ঘরেই উন্নত মানের ইট, রড সিমেন্টসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত গৃহ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করছেন জেলা প্রশাসক ডা. কে এম কামরুজ্জামান সেলিমসহ আমি নিজেই।

news24bd.tv / কামরুল