বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথ চালু

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথ চালু

ফেরিতে কমেছে ভিড়
Other

প্রায় এক মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে শুরু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। সোমবার ভোর থেকে উভয় ঘাট থেকে ৭৫টি লঞ্চ সীমিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। ফলে যাত্রীদের চাপ কমেছে ফেরিতে।

এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৪ এপ্রিল বিকেল থেকে এই নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে আইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

এরপর থেকে যাত্রী পারাপারে জন্য শুধু ফেরি চলাচল স্বভাবিক ছিল এই নৌপথে। ফেরি ছাড়া বিকল্প নৌযান না থাকায় এই নৌপথে আসা যাত্রীদের চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঈদে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের পর ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।

এদিকে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি দেখা গেছে যাত্রীদের মধ্যে।

বিআইডব্লিউটিএ ঘাট সূত্র জানায়, এই নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ ও ১৮টি ফেরি রয়েছে। বর্তমানে ১৮টি ফেরির সব কয়টি চালু রয়েছে। ১২টি লঞ্চের কাগজপত্র ত্রুটি থাকায় সোমবার সকাল থেকে ৭৫টি লঞ্চ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লঞ্চে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। ফলে আগে লঞ্চের ভাড়া ৩৫ টাকা পরিবর্তে যাত্রীদের এখন ৫৫ টাকা গুনতে হচ্ছে।

গত ৪ এপ্রিল বিকেলে থেকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল এই নৌপথে। তবে নিয়ম ভেঙে কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করে। গত ৩ মে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানি হয়। এরপর থেকে এই নৌপথে স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে যায়। এরপর থেকে পুরোপুরি স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকে এই নৌপথে। বিকল্প নৌযান না থাকায় যাত্রীদের শুধুমাত্র ফেরিতে পদ্মা পার হতে হয়েছে।

সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় যাত্রীরা ফেরির পাশাপাশি লঞ্চেও পদ্মা পারাপার হচ্ছে। ফলে ফেরিতে গত কালের তুলনায় অনেক কম যাত্রী দেখা গেছে। এখন আর ফেরিতে যাত্রীদের গাদাগাদি নেই। ঢাকাগামী বেশির ভাগ যাত্রী লঞ্চে পার হচ্ছে। তবে লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী পারাপারের নির্দেশনা থাকলেও তার কার্যকারিতা তেমন দেখা যায়নি। লঞ্চে আগের মত যাত্রী বহন করছে। লঞ্চে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হলেও বেশির ভাগ যাত্রী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না। অনেকের মুখে মাস্ক নেই।

গোপালগঞ্জ থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী সরোয়ার হোনেন বলেন, ‘ঘাটে আসা মাত্রই লঞ্চে পদ্মা পারাপার হই। ভাড়া আগের তুলনায় অনেক বেশি নিলো।

কিন্তু যাত্রী তো অর্ধেক নিচ্ছে না লঞ্চে। আগের মত যাত্রী। লঞ্চেও ভিড় ফেরিতে ভিড়। তবে গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলি নেই। এটাই স্বস্তি। ’

খুলনা থেকে আসা মুন্সিগঞ্জগামী যাত্রী শাহাদাত সরদার বলেন, এত গরমে রোদের মধ্যে ঘাটে বসে থাকা খুবই কষ্ট। ঘাটে আসা মাত্রই যে পদ্মা পাড়ি দিতে পারছি এটাই শান্তি। ’

মাদারীপুর থেকে আসা ইমরান খান নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘গাড়ি থেকে নেমে আগে ফেরি ঘাটে যাই। সেখানে ফেরি না পাওয়ায় সরাসরি লঞ্চে ঘাটে যাই। একটু ভিড় থাকলেও লঞ্চে বসে পদ্মা পাড়ি দিতে পারছি। তবে ৩৫ টাকার ভাড়া ৫৫টাকা। এটা অনেক বেশি। ’

বিআইডব্লিউটিএ বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, ‘ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছ।

আমাদের লোকজন লঞ্চঘাটে দাঁড়িয়ে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক যাত্রী উঠানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন পরে লঞ্চ চালু হওয়ায় লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের মাঝেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ঘাটে যাত্রীদের ভিড় কমেছে। আগের মতো ভিড় নেই। যানবাহনের চাপও তেমন নেই। ঘাটে আসা মাত্রই যানবাহন ও যাত্রীরা ফেরিতে উঠতে পারছে। ’

news24bd.tv তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর