দেশের কৃষি সম্প্রসারণে অনন্য ভূমিকা রাখছে বশেমুরকৃবি

দেশের কৃষি সম্প্রসারণে অনন্য ভূমিকা রাখছে বশেমুরকৃবি

খ্যাতি ছড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে
Other

প্রায়োগিক গবেষণা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ পর্যন্ত ধানসহ অন্যান্য অর্থকরী ফসল এবং সবজি ও তৈল জাতীয় ফসলের ৫০টির বেশি উচ্চফলনশীল জাত এবং ১৪টি কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। করোনা মহামারির মধ্যেও গত এক বছরে প্রতিষ্ঠানটি শিম, চেরি টমেটো, সয়াবিন, ফুলসহ অন্যান্য ফসলের ১৪টি জাত কৃষকের চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করেছে। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ও গবেষকদের দুই শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে।

উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলো কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে এ বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে সহযোগিতা বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, চারটি বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সাড়ে ৯ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ৫৬১ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে গবেষণার এক অনন্য কেন্দ্র। হাজারো ফুল, ফল, ঔষধি ও ফসলের গাছগাছালিতে আচ্ছাদিত এ শিক্ষাঙ্গনের বিশাল ক্যাম্পাসে গবেষক দল উদ্ভাবন করে চলেছে নানা জাতের ফসল।

এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, বলেন, সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির মাধ্যমে কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকারের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ইতোমধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় ৩২১ জন গবেষককে পিএইচডি, ১৯০৮ জনকে এমএস, ৮১ জনকে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং ১৫৯৩ জনকে কৃষি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে বিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি দিয়েছে।

মৌলিক গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে সম্মানজনক আন্তর্জাতিক ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পুরস্কার অর্জন করেছে। বৃক্ষরোপণ ও কৃষি বনায়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৪ ও ২০১৭ সালে শিক্ষা, গবেষণা ও বহিরাঙ্গন কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার অর্জন করে।

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গবেষণা, উদ্ভাবন ও সামাজিক অবস্থান- এই তিন সূচকের মূল্যায়নে বর্তমানে প্রথম স্থানে রয়েছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বখ্যাত 'সিমাগো ইনস্টিটিউট র‌্যাংকিং-২০২১' প্রতিবেদনে সম্প্রতি এ তথ্য উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের এই স্বীকৃতিকে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আরও অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে দেখছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া। কৃষি গবেষণা ও ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবনে এ প্রতিষ্ঠান বিশ্বসেরা হবে- এখন এমন স্বপ্ন দেখছে কর্তৃপক্ষ।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চার হাজার ১২৬টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে স্পেনের সিমাগো-স্কোপাস জরিপে বাংলাদেশের এ বিশ্ববিদ্যালয় সেরা হয়েছে। একদল গবেষকের নিরলস গবেষণার ফলে আজ এই গৌরব অর্জনে সক্ষম হয়েছে বশেমুরকৃবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলো কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোক গ্রামে প্রতিষ্ঠানটির বহিরাঙ্গন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। কাউলতিয়া ইউনিয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে নতুন একটি 'টেকনোলজি ভিলেজ' প্রতিষ্ঠার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয়েছে 'প্রযুক্তি প্রদর্শনী মাঠ'। প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংবলিত একটি ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালও চালু করেছে কর্তৃপক্ষ।

news24bd.tv তৌহিদ