ইরানের বিটুমিন ভূয়া পরিচয়ে দেশে এসে হয়ে যাচ্ছে আমিরাতের (ভিডিও)

Other

আমদানি নিষিদ্ধ দেশ ইরানের বিটুমিন, সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে ভূয়া পরিচয়ে ঢুকছে বাংলাদেশে। এই তথ্য দিয়েছেন খোদ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের বিটুমিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। সবচেয়ে বিষ্ময়কর তথ্য হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিটুমিন উৎপাদনকারী দেশ নয়। তবে, বাংলাদেশের রাস্তায় ব্যবহার হচ্ছে, ইউএই লেখা ড্রামের বিটুমিন।

বিটুমিনের গ্রেড নির্ধারণ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাকারিয়ার মতে, বিটুমিন আমদানির প্রক্রিয়ায় গলদ আছে। যেখানে প্রতি পদে পদে, মানহীনতা হতে পারে। তাই, আমদানিকে নিরুতসাহিত করার পক্ষে মত তার।

বিটুমিন বা পিচ রাস্তা তৈরির অন্যমত অপরিহার্য উপাদান।

চাহিদার তুলনায় দেশী উৎপাদনমাত্র ২৫-৩০ ভাগ, তাই আমদানি নির্ভরতা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সড়কে ব্যবহার হওয়া বেশির ভাগ ড্রামের গায়ে লেখা বিটুমিন আনা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। আমদানিকারকরাও একই কথাই বলছেন। আরো একজন আছেন নাম মনে নাই।

কিন্তু অনুসন্ধান এবংআন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিটুমিন উৎপন্নকারী দেশ নয়। সেখানে, মৌলিক বিটুমিন উৎপাদন কারখানা নেই। ইউএই-এর প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সেখানে বিটুমিন আসে। অনুসন্ধানী তথ্য বলছে, ইরান থেকে আসা বিটুমিন সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে বাংলাদেশে আসে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলছেন, আবুধাবীতে এতো তেল নেই যে তারা বিটুমিন উৎপাদন করবে। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে বিটুমিন নিম্নমানের বিটুমিন এনে তা রিফাইন করে আমাদের দেশে দেয়।  

বিষয়টি আরো পরিস্কার হবার জন্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিটুমিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলা। তারা পরিস্কার বলেছেন, ইরানের আল আব্বাস পোর্ট থেকে বিটুমিনের জাহাজ সরাসরি এসে ভিড়ে ইউএই’র জেবেল আলী পোর্টে। অনুসন্ধানের পরের ধাপে, ইরানের একটি বিখ্যাত বিটুমিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা জানান, নিয়মিতই বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে বিটুমিন রপ্তানি হচ্ছে। তবে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে সরাসরি না করে ইউএই’র মাধ্যমে করা হয়।

আরও পড়ুন

  যে জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়বে সেখানেই কঠোর লকডাউন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  মিথিলার জন্মদিনে সৃজিতের কামনা ‘চিরকাল চিরযৌবনা থেকো’

  দেশের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপস্থিতি জানে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  মুফতি আমির হামজাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ

 

বিটুমিন বিশেষজ্ঞ এবং আইইউটি’র সহকারী অধ্যাপক ড. নাজমুস সাকিব বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যে বিটুমিন আসছে তার মান ঠিক নেই। এই বিটুমিন যে ইউএই’র তার কোন প্রমাণ নেই। কারণ তারা নিজেরা বিটুমিন উৎপাদন করে না। বিটুমিনের ড্রাম তাদের হতে পারে কিন্তু এই বিটুমিন তাদের নয়।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, মিথ্যা ঘোষণায় আসা এসব বিটুমিন কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই দেশে আসছে আর ব্যবহার হচ্ছে বেশিরভাগ সড়কে। সমাধানের পথ দেখিয়েছেন, বিটুমিনের গ্রেডিং নির্ধারণ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া। তিনি বলছেন, দেশে উৎপাদন বিটুমিন দিয়ে কাজ করা গেলে রাস্তা আরও বেশি টেকসই হবে।

তার পরামর্শ, ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী রাস্তা নির্মাণে, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে, বাড়াতে হবে দেশী আন্তর্জাতিক মানের বিটুমিন উৎপাদন।

news24bd.tv আহমেদ