১৬৫ কিমি গতিতে বুধবার ভোরেই আঘাত হানতে পারে ইয়াস

১৬৫ কিমি গতিতে বুধবার ভোরেই আঘাত হানতে পারে ইয়াস

অনলাইন ডেস্ক

অবশেষে সব পূর্বাভাস সত্যি করে দিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলো ইয়াস। আবহাওয়াবিদরা ক’দিন ধরেই বলে আসছিলেন, মঙ্গলবার (২৫ মে) রাতে ভয়ঙ্ককর রূপ ধারণ করবে সামুদ্রিক এ ঝড়টি। মঙ্গলবার ভারতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় সেখান আবহাওয়া অফিসের এক বুলেটিনে বলা হয়, গত সাড়ে ৫ ঘণ্টায় স্থলভাগের আরও কাছে চলে এসেছে ইয়াস। এখন ইয়াসের অবস্থান পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা সৈকত থেকে মাত্র ২৪০ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে।

বুধবার ভোরেই তা স্থলভাগে পৌঁছে যেতে পারে। তাই পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলে লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার ভোরেই সেখানে হানা দিতে পারে ‘অতি শক্তিশালী’ ইয়াস। বুধবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বইতে থাকার পূর্বাভাস ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়াচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ঘূর্ণঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার থাকলেও পরবর্তী ৬ ঘণ্টায় তা হয়েছিল ১৫ কিলোমিটার। এখনও সেই গতিই বজায় রেখেছে ইয়াস।

বুলেটিনে বলা হয়েছে, ইয়াস স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ১৩৫ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ (গাস্টিং) ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে। বুধবার সকালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ (গাস্টিং) ১৮৫ কিলোমিটার।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে ছয় ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এমন খবর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই আলাকায় অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর,  কক্সবাজার, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড় বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ইয়াস নামটি দিয়েছে ওমান, এটি একটি পার্সিয়ান শব্দ। ইংরেজি জেসমিন আর বাংলায় জুঁই ফুল বলা হয় একে।

news24bd.tv/আলী