২০০৬ সালের ১৩ জুন চীনের ইউনান প্রদেশের ফুক্সিয়ান লেকে শুরু হয়েছিল অনুসন্ধান। তখন লেকের নিচে পানিতে বেশ কিছু প্রাচীন ভবনের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। পানির গভীরে গবেষকেরা দেখতে পান প্রচুর পাথর বসানো রহস্যময় ভাস্কর্যও। স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি দেখতে পিরামিডের মতো।
পাথরের খোদাইগুলো এক ধরনের হেঁয়ালিতে ভরা, রহস্যময়। একটি পাথরের ওপর খোদাই দেখতে সূর্যের সাদৃশ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সূর্যের আকারের এই খোদাই একেবারে বিরল। এই প্রতীক এক হাজার ৮০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পানির নিচের এই আবিষ্কার বলে দিচ্ছে, বহু আগে সভ্য মানুষেরা এসব জাঁকজমকপূর্ণ স্থাপত্য নির্মাণ করেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এসব স্থাপনা নিয়ে যে ধারণা করে এসেছেন, তা নিয়ে নতুন করে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
লাইফ নিউজের খবরে বলা হয়, ঐতিহাসিক নথি অনুসারে, ফুক্সিয়ান লেক এলাকায় ইউয়ান নামের একটি শহর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল পশ্চিমাঞ্চলীয় হান রাজবংশের আমলে। খ্রিষ্টপূর্ব ২০৬ থেকে ২৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই রাজবংশের শাসন চলে।
কিন্তু সুই ও তাং রাজবংশের পর শহরটির ঐতিহাসিক নথি নাই হয়ে গেছে। ৫৮৯-৯০৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ছিল সুই ও তাং রাজবংশের শাসন। তবে স্থানীয় কিংবদন্তি বলছে, ইউয়ান শহরটি ফুক্সিয়ান লেকে তলিয়ে গেছে।
ফুক্সিয়ান লেকে ইউয়ান শহর কিংবা প্রাচীন দিয়ান রাজবংশের রাজধানী ডুবে গিয়েছিল ধারণার ওপর ভিত্তি করে আগের অনুসন্ধানটি করা হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় অনুসন্ধানে সেই ধারনার বিপরীত প্রমাণ পাওয়া গেছে: ভবনগুলো পাথর দিয়ে নির্মিত। কিন্তু দিয়ান ও ইউয়ান শহর কাঠ ও মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল।
শব্দতরঙ্গের সাহায্যে করা এক অনুসন্ধান বলছে, ফুক্সিয়ান লেকের গভীরে ওই স্থাপত্য প্রায় দুই দশমিক চার বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে। যা হান রাজবংশের রাজধানীর চেয়ে বড়। পানির নিচের এতবড় স্থাপত্যের কোনো ঐতিহাসিক নথি না থাকায় সবাই বিস্মীত।
আবার মাস্কের মতো দেখতে খোদাইও পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মাস্কের চেপ্টা গাল ও খাঁজ কাটা দাঁতে কোনো মানবীয় চেহারা ফুটে ওঠেনি।
news24bd.tv/আলী