ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’: খুলনায় ঝড়ো বাতাস বইছে, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’: খুলনায় ঝড়ো বাতাস বইছে, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

Other

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ভোর থেকেই ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতও হচ্ছে। বুধবার (২৬ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২০ মিলিমিটার।  

আজ সকাল ১০টায় খুলনায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার।

মাঝে মধ্যে বাতাসের গতিবেগ আরও বাড়ছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, সকাল ১১ থেকে দুপুর ১২টার দিকে ঝড়টির প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করবে। তখন উপকূলীয় নদীতে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, ঘূর্ণিঝড় থেকেও জোয়ারের সময় জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ টিকিয়ে রাখাই এখন উপকূলে বড় চ্যালেঞ্জ।   

এদিকে মঙ্গলবার রাতে জোয়ারের সময় খুলনার কয়রার ঘাটাখালি, মহারাজপুর, দক্ষিণ বেতকাশি ও  মহেশ্বরীপুরে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। বুধবার সকাল থেকে ১০টি পয়েন্টে মাটি দিয়ে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছেন এলাকাবাসী। কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন জানান, মূল ভয়টা হচ্ছে আজ দুপুরে ভরা জোয়ারের সময় অতিরিক্ত পানির চাপ বাড়লে বাঁধ টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হবে।  

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতের জোয়ারে দুই থেকে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে মহারাজপুর মঠবাড়ি, দক্ষিণ বেতকাশির আংটিহারা ও মাটিভাঙ্গা পয়েন্টে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। বৈরি আবহাওয়ায় বাতাসের গতিবেগ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধে চাপ বাড়ছে।

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে পাইকগাছার দেলুটি চকরি বকরি, কপিলমুনি সিলেমানপুর ও গড়ইখালি খুতখালি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেমানপুর পয়েন্টে বাঁধ মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু রাতের জোয়ারে পানি অতিরিক্ত চাপে তা আবারও ভেঙ্গে গেছে।  

আরও পড়ুন:

 ‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিল ইয়াস, ৬ ফুট উচ্চতার জোয়ারের শঙ্কা 

 দুপুরে আঘাত হানতে পারে ‘ইয়াস’, সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে   ১৮৫ কিমি

 যে কাজটি করলে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মিলবে

 ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে রক্ষার ৭ উপায়

তিনি বলেন, সোলাদানা ইউনিয়নের নারকেলতলা, বরইতলাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভরা জোয়ারের সময় আবারও জলোচ্ছ্বাস তৈরি হলো ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে। মাইংকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে।  

দাকোপে কামিনীবাসিয়া, মোজামনগর, গৌর কাঠি, মৌখালি পিচের মাথা, পানখালি পুরাতন খেয়াঘাট, জাবেরের খেয়াঘাট ও খলিসা পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি পয়েন্টে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত কাজ করা হচ্ছে।  

খুলনা আবহাওয়া অফিসের প্রধান কর্মকর্তা মো. আমিরুল আজাদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। মাঝে মধ্যে মাঝারি আকারের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই সাথে ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হতে পারে।  

news24bd.tv নাজিম