ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরায় সর্বশান্ত চিংড়ী চাষিরা
ভেসে গেছে ৫৫ কোটি টাকার মাছ

ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরায় সর্বশান্ত চিংড়ী চাষিরা

Other

বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ংকারি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে চিংড়ী চাষিরা। কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও কাকশিয়ালিসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চ জোয়াওে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সুন্দরবন সংলগ্ন ৪টি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে।  

প্লাবিত হয় প্রায় ৭ হাজার চিংড়ী ঘের। ভেসে গেছে ৫৫ কোটি টাকার মাছ।

গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলবাসীকে সর্বশান্ত করে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সূদমুক্ত ঋন চান ক্ষতিগ্রস্থ্য মৎস্য ও চিংড়ী চাষীরা।

গত ২৬ মে বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলা প্রলয়ংকারি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় আছড়ে পড়ে সাতক্ষীরার উপকূলে। ততক্ষনে সুন্দরবন সংলগ্ন কপোতাক্ষ,খোলপেটুয়া ও কালিন্দী নদীর ভাঙ্গন কবলিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৩টি পয়েন্টের ২০ পয়েন্ট ভেঙ্গে এবং শতাধিক স্থানে জোয়ারের পানি উপচে পড়ে প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়।

হু হু করে মূর্হুতের মধ্যে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে রস্তা-ঘাট খাল-বিল এবং বসত বাড়ীসহ প্রায় ৭ হাজার চিংড়ী ঘের তলিয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা।

আশাশুনি উপজেলা প্রতাপনগর,শ্রীউলা, আনুলিয়া,বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের ১৪৫০ হেক্টর জমির ৩ হাজার ৫৬০টি মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। আর শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, কৈইখালী, নুরনগর ইউনিয়নের ৯৫০ হেক্টর জমির প্রায় ৩ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। লোনা পানির কারণে এসব অঞ্চলে ফসল ফলে না। কিছু এলাকায় লবণসহিষ্ণু ধান উৎপাদন হলেও জষ্ঠ্যের আগেই বৈশাখ মাসে কৃষকদের ঘরে ধান উঠেগেছে। তাই কৃষিপণ্য ফসলের কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।   

এছাড়া কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসেগেছে কয়েক হাজার মৎস্য ঘের। সর্বশান্ত হয় ক্ষতিতিগ্রস্থ্য মৎস্য চাষিরা

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাব মতে দেবহাটা, কালিগঞ্জ , শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। এতে ছোটবড় ৭ হাজারের মত মৎস্যঘের প্লাবিত হয়েছে। ক্ষক্ষিগ্রস্থ্য হয়েছে রেনুপোনা ও হ্যাচারি মালিকরা। ভেসে গেছে আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকার মাছ।  

তিনি আরও জানান গতবছর ঘূর্নিঝড় আম্ফানে চিংড়ী ও মৎস্য চাষীদের যে ক্ষতি হয়েছিল সেটি কাটিয়ে উঠার আগেই ইয়াস তাদেরকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে। তাই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সল্পসুদে মৎস্য চাষীদের ঋন দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রত্যাশা করেন তিনি। এছাড়া খুব শিঘ্রই টেকসই দীর্ঘ মেয়াদি বেড়িবাঁধ নির্মাণের মধ্যদিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ আবারও প্রকৃতির সাথে লড়াই করে স্বাভাবিক জীবনে ঘুরে দাঁড়াবে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

news24bd.tv / কামরুল