ভারতে গুলিবিদ্ধ সেই টিকটক হৃদয়

ভারতে গুলিবিদ্ধ সেই টিকটক হৃদয়

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের বেঙ্গালুরুতে তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দুই নারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্যটির স্থানীয় পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাদেরকে ঘটনাস্থলে তদন্ত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় সুযোগ বুঝে বেঙ্গালুরু পুলিশের উপর হামলা করে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন টিকটক হৃদয় বাবুসহ দু'জন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাতে রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ ও অখিল নামে চার তরুণ ও দুই নারীকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

যদিও গ্রেফতার হওয়া নারীদের পরিচয় জানানো হয়নি।

বেঙ্গালুরু পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার (২৮ মে) সকালে পুলিশের হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করলে টিকটক ‍হৃদয় ও সাগর গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাকিরা পুলিশ হেফাজতেই রয়েছে।  

ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত সবাই অবৈধভাবে ভারতে গেছেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে তরুণীকে নির্যাতন করা হয়েছে, তাকেও এই চক্রটি অবৈধভাবে ভারতে নিয়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেছিলো বলে জানিয়েছে ভারতের পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর সন্ধান এখনো পায়নি তারা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাতে টিকটক হৃদয়বাবুসহ ওই যু্বকদের বিরুদ্ধে ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩-৪ জন যুবক শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করছে। জানা যায়, ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে ভারতে। যৌন নির্যাতনকারীদের মধ্যে একজনের সংগে ঢাকার মগবাজারের এক তরুণের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা ছবির মিল পাওয়া যায়। তদন্ত করে তার আসল নাম-ঠিকানা শনাক্ত করে পুলিশ।

এরপর ছেলেটির মা ও মামাকে ভিডিওটি দেখানো হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে মা স্বীকার করেন ভিডিওতে তাঁর ছেলে রিফাতুল ইসলাম হৃদয় রয়েছে। স্থানীয়রাও হৃদয়কে শনাক্ত করে। স্থানীয়ভাবে সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত। তার বয়স ২৬ বছর। উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে চার মাস আগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে বাসার কারো সংগে তার যোগাযোগ ছিলো না বলে পুলিশকে জানান হৃদয়ের মা ও মামা।

হৃদয়ের বাসা তল্লাশি করে তার জাতীয় পরিচয়পত্র, জেএসসি পরীক্ষার এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও রমনা থানায় তার নামে দায়েরকৃত একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার এজাহার ও এফআইআর কপি জব্দ করে ঢাকার তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ।

কৌশলে হৃদয়ের মামার হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তার ভারতীয় নম্বরে যোগাযোগ করে পুলিশ। সে জানায়, তিন মাস আগে ভারতে গেছে। যৌন নির্যাতনের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা ১৫ থেকে ১৬ দিন আগের। ভিডিওর ভিক্টিম বাংলাদেশি তরুণী এবং ঢাকার বাসিন্দা। বয়স ২০-২২ বছর।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাড়ি কিশোরগঞ্জ। ঢাকায় হাতিরঝিল এলাকায় বাসা। মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরিবারও তাকে চিনতে পারে। পরে মেয়েটির বাবা বৃহস্পতিবার রাতে হাতিরঝিল থানায় টিকটক হৃদয়সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

news24bd.tv/আলী