বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি (ভিডিও)

বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি (ভিডিও)

অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে খুলনার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। ভাঙনের স্থান দিয়ে পানি ঢুকে প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। পাউবো বাঁধটি মেরামত করতে না পারায় স্বেচ্ছাশ্রমে উপজেলার প্রায় তিন হাজার মানুষ বাঁধ মেরামতে নামে।

কিন্তু মঙ্গলবার সকালে খুলনার-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের  সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু ৫০-৬০ জন অনুসারী নিয়ে একটি ট্রলারে করে বাঁধ এলাকায় আসেন।  

ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে সেখানে বাঁধটি মেরামত করতে নামা জনগণ এমপি  মো. আক্তারুজ্জামান বাবু দেখে ধাওয়া দেয়।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে এমপি আক্তারুজ্জামান বাঘালিয়া ইউনিয়নের হোগলারহাট থেকে প্রায় ৫০-৬০ জন অনুসারী নিয়ে একটি ট্রলারে করে বাঁধ এলাকায় আসেন।

তখন এমপিকে দেখে বাঁধ মেরামতরত এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হন। তারা এমপির ট্রলারের দিকে কাঁদা ছুড়ে তাকে ফিরে যেতে বলেন। একে একে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী নদীতে নেমে আসেন।

এ সময় এমপি বাঁধ এলাকার একটু দূরে ট্রলার থেকে নামেন। তখন এলাকার কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। এরপর এমপি উপস্থিত এলাকাবাসীর উদ্দেশে মাইকে বক্তৃতা করেন। এরপর তিনি বাঁধ মেরামতের কাজে নামলে, অধিকাংশ স্বেচ্ছাশ্রমিক বাঁধ মেরামতের কাজ ফেলে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী মহারাজপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর দেয়াড়া ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, এমপি সাহেব আসলেন ট্রলারে করে। তখন স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে আসা জনগণ তার (এমপি) আসার প্রয়োজন নেই বলে কাদা ছুড়তে থাকেন।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে এমপি বাঁধের কাজ শুরু করতে গেলে অধিকাংশ জনগণ কাজ ছেড়ে চলে যান। তা না হলে আজ বাঁধের কাজ শেষ হয়ে যেত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বেচ্ছাশ্রমে আসা একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, বাঁধের কাজ আসলেই এমপি তার আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে কাজ করান। ফলে কাজ ভালো হয় না। একটু ঝড়-বৃষ্টি হলেই বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ জনগণ। সে কারণে এমপির ওপর উপজেলার অধিকাংশ মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তার প্রকাশ ঘটেছে আজ।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ একটু সমস্যা করছিল। পরে এমপি সাহেব বক্তৃতা করলে তারা আবার শান্ত হয়ে যায়।  

অন্যদিকে ঘটনা অস্বীকার করে আক্তারুজ্জামান এমপি মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এখন তাদের সঙ্গে কাজ করছি আর তাদের খাওয়াচ্ছি। এ কথা বলেই ফোন রেখে দেন আক্তারুজ্জামান এমপি

বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন 

news24bd.tv/আলী