শিক্ষক নিজে যদি না জানেন, শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন!

শিক্ষক নিজে যদি না জানেন, শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন!

Other

১. পিসি ককাস (সংসদীয় কমিটি) থেকে জানানো হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী লেচে (অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল শিক্ষামন্ত্রী স্টিফেন লেচে) সব মিলিয়ে ৪৫ মিনিট কথা বলবেন। সাড়ে চারটা থেকে ৫.১৫ মিনিট। কিন্তু কথা শুরুর পর সেই সময় সীমা তিনি ধরে রাখতে পারেননি। তিনি নিজের বক্তব্য ঠিকই শেষ করলেন ৫ থেকে ৭ মিনিটে, বাকি সময় লেগে গেল রিপোর্টারদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে।

প্রভিন্সিয়াল গভর্ণমেন্টের প্রিমিয়ার থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের প্রেস ব্রিফিংগুলো এমনই হয়। ৫/৭ মিনিটে তারা মূল কথাটা বলে ফেলেন, বাকি সময় ধরে রিপোর্টারদের প্রশ্নের জবাব দিতে থাকেন। শিক্ষা মন্ত্রী লেচেও তাই করলেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর গ্রেড নাইনের ম্যাথ কারিক্যুলামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে, সেটি জানাতেই তিনি এথনিক রিপোর্টারদের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

 

২. কানাডীয়ান বাচ্চারা ম্যাথে খুবই দুর্বল- এটি পুরনো এবং প্রতিষ্ঠিত সত্য। বাচ্চারা কোন গ্রেডে ম্যাথে কোন পর্যায়ে থাকবে তার নির্দিষ্ট একটি স্ট্যান্ডার্ড আছে। এই পরিমাপটি সরকারিভাবে করে দেয়া। শিক্ষার্থীরা সেই স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করতে পারলো কী না তা নিয়ে আলাদাভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থাও আছে।  

সেই পরীক্ষায় ব্যক্তিগতভাবে কোনো শিক্ষার্থীর দিকে আঙুল তোলা হয় না, স্কুলকে বিবেচনায় নেয়া হয়। বলাই বাহুল্য, প্রভিন্সের গ্রেডিং এ অধিকাংশ শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হতে পারে না। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি হয়েছে।  

৩. ইলিমেন্টারি স্কুলে ‘ফাইনান্সিয়াল লিটারেসি’ আগেই যুক্ত করা হয়েছে। গ্রেড নাইনের ম্যাথে পার্সোনাল ফাইনান্সকে মূখ্য করে নতুন কারিক্যূলাম করা হয়েছে। গ্রেড নাইনের কারিক্যুলামে এখন ব্যক্তিগত/পারিবারিক বাজেট প্রণয়ন, আয় ব্যয়ের পরিকল্পনা ও হিসাব রক্ষণ, গাড়ি বাড়ি কিনতে হলে তার কিস্তি, সুদের তুলনামুলক হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে একজন ব্যক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের হিসাব নিকাশকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

মিনিষ্টার রেচে বলছিলেন- প্রায়ই দেখা যায়,ইউনিভার্সিট শেষ করে এসে একজন কানাডীয়ান তরুণ নিজের বাড়ি কেনার পরিকল্পনাটা ঠিক মতো করতে পারে না, তার আয় ব্যয়ের হিসাবে গড়মিল হয়ে যায়। কাজেই তাদের প্র্যাকটিক্যাল করে গড়ে তোলা ছাড়া উপায় নেই। সে জন্যেই ম্যাথ কারিক্যুলামের নতুন এই বিন্যাস।
 
৪. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে-বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের জন্য নেয়া পদক্ষেপটা। শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক মূল্যায়ন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে, তারা ঠিক মতা পড়াতে পারছেন কী না, ম্যাথ ঠিক মতো বুঝছেন কী না তার পরীক্ষা দিতে হবে। এর বাইরে পেশার মানোন্নয়নের জন্য বিনা পয়সায় তাদের আপগ্রেডেশনের সুযোগ দেয়া হবে।   

৫. কনজারভেটিভ সরকারের এই পরিকল্পনাটা ভালো লাগল। শিক্ষক নিজে যদি না জানেন- তিনি শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন। শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষকরা ম্যাথ শেখাবেন তাদের জন্যও বাধ্যতামুলক ম্যাথ টেষ্টের নিয়মটা নি:সন্দেহে চমকপ্রদ। কনজারভেটিভদের এই পদক্ষেপটা সমর্থন করলাম।

শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ

(মত ভিন্ন মত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv / কামরুল