বেশ কয়েক বছর আগে বেলজিয়ামের রাজনীতিক অ্যান ব্রুসিলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ডাবলিন শহরে। তখন সম্ভবত তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ডাবলিনে মুক্তচিন্তার ওপর কনফারেন্স হচ্ছিল, সেই কনফারেন্সেই আমার মতো যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি।
অ্যান আমার নাম জানতেন, আমার সঙ্গে দেখা হওয়ায় বেশ উচ্ছসিত।
একদিন আমরা দুজন ট্রিনিটি কলেজের লাইব্রেরিতে যাই। পলক ফেলা যায় না এমন অসাধারণ লাইব্রেরি।লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে যখন গল্প করছি, অ্যান কথায় কথায় বললেন, তিনি গর্ভবতী। তারপর আমাদের কথোপকথন এভাবে এগোলো।
--বেশ তো! এ কি প্রথম সন্তান?
--হ্যাঁ।
--তুমি বেশ এক্সাইটেড মনে হচ্ছে।
--রীতিমত।
--তোমার বরও নিশ্চয়ই বেশ খুশি!
--আমার বর নেই।
--বিয়ে করোনি?
--না।
--তাহলে নিশ্চয়ই লিভ-ইন করছো।
--মোটেই করছি না। আমি একা থাকি।
--তাহলে নিশ্চয়ই বয়ফ্রেন্ড আছে!
--না, ওটিও নেই।
--ওটিও নেই?
--না।
--বলছো কী?
--হাহা, ঠিক বলছি।
--তাহলে?
--তাহলে কী?
--এই বাচ্চার বাবা কে?
--জানিনা।
--জানোনা মানে?
--জানিনা।
--এ তো হতে পারে না। নিশ্চয়ই জানো।
--বিলিভ মী, জানিনা। আমি জানতে চাইনি।
--বুঝতে পারছি না। তুমি কি চোখ বন্ধ করেছিলে যখন সেক্স করছিলে? ধর্ষণের শিকার টিকার হওনি তো?
--সেক্স টেক্স কারো সঙ্গে করিনি। ধর্ষণেরও শিকার হইনি।
--তবে?
--স্পার্ম ব্যাংক থেকে স্পার্ম নিয়েছি।
--তোমার মতো এত সুন্দর একটি মেয়ে, চুটিয়ে প্রেম করবে। প্রেমিকের স্পার্মের কী অভাব হতো? তোমাকে স্পার্ম ব্যাংকে কেন যেতে হলো?
-- দেখলাম বয়স পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে গেছে। বাচ্চার একটা শখ ছিল। নিলে এক্ষুনি নিতে হবে। পরে দেখা যাবে আমার এগই ফুরিয়ে গেছে।
--ভালো হতো প্রেমিকের স্পার্ম নিতে যদি।
--প্রেমিক পেতে হলে আগে তো প্রেম করতে হবে। যদি প্রেম হতোও, কোনও প্রেমিকের স্পার্ম নেওয়ার আমার কোনও ইচ্ছে ছিল না।
--কেন? বরের স্পার্ম নিতে?
--বিয়ে করার প্রশ্নই তো ওঠে না। স্পার্ম নিতে যাবো কেন?
--কারণ বলো।
--বিয়ে না করার কারণ?
--না, ঘনিষ্ঠ কারও স্পার্ম না নেওয়ার কারণ।
--কারণ, আমি দুজনের বাচ্চা চাইনি, আমি একার বাচ্চা চেয়েছি। আমার একার।
--কিন্তু স্পার্ম তো কোনও এক ব্যাক্তির, তাহলে তো দুজনেরই হলো।
আরও পড়ুন:
আম্পায়ারের ওপর চড়াও হয়ে লাথি দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙলেন সাকিব (ভিডিও)
রাজশাহী মেডিকেলে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু
সুযোগ পেলে নায়ক হিসেবে অভিনয় করতে রাজি বেরোবি উপাচার্য কলিমউল্লাহ
পাওনা টাকা না দেওয়ায় প্রায় ৬ কোটি টাকার বাড়ি ভেঙে দিলেন মিস্ত্রি
--না, দুজনের হলো না। আমি জানি না স্পার্ম কার। স্পার্ম যার সেও জানে না, তার স্পার্ম কোথায় কাজে লেগেছে।
--বাচ্চা দুজনের হলে অসুবিধে কী? দুজনে লালন পালন করলে তো সুবিধে।
--একেবারেই না। আমি একা দায়িত্ব নেবো। লালন পালন করবো আমি যেভাবে চাই, সেভাবে। অন্য কারও নাক গলানো তো চাই না।
--তাহলে এ তোমার একার সন্তান!
--একশ' ভাগ।
--তুমি মন্ত্রী হয়ে এই যে বিয়ের বাইরে বাচ্চা নিচ্ছ, এমনকী কোনও লিভ-ইন রিলেশানেও তুমি নেই। লোকে কিছু বলবে না?
--লোকে তো বলছেই। শুভকামনা দিচ্ছে, অ-ভিনন্দন জানাচ্ছে।
--আমাদের দেশে কোনও মেয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিলে কেউ ওকে বাঁচতেই দিত না।
অ্যানের হাসিখুশি মুখখানা ম্লান হয়ে গেল শুনে। আমি হেসে বললাম,
--সভ্য দেশে জন্ম নিয়েছো বলে স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছো। আর আমরা মেয়েরা অসভ্য দেশে জন্মেছি বলে স্বাধীনতার স্ব-ও কোনওদিন চেখে দেখার সুযোগ পাইনা।
(মত ভিন্ন মত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )
news24bd.tv নাজিম