সাকিবের যে বলে, মুশফিকের এলবিডাব্লিউ আম্পায়ার দিলোনা, সেটা খুবই দুঃখজনক। সাকিবের টিপিক্যাল আর্ম ডেলিভারি, একেবারে নিশ্চিত স্ট্যাম্পে যাচ্ছিলো বলটা। আম্পায়ারের মান খারাপ, অথবা ইচ্ছা করেই আউটটা সে দেয় নাই। সাকিব এর পর লাথি দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেছে! বেশ কয়েকটা ম্যাচ ওর ব্যান্ড হওয়ার কথা এর জন্য।
অত্যন্ত অ- স্পোর্টম্যান ধরনের কাজ সে করেছে। তবে জিনিসটা আমার খারাপ লাগে নাই।ভালো লাগাটা কোথায় জানেন, এত কিছু অর্জনের পর, এত দিন খেলে, এত পয়শা টয়শা কামানোর পরেও, খেলাটায় যে ওর ইনভলভমেন্ট আছে, সেইটা দেখে আসলে আশ্বস্ত বোধ করলাম। এখনো সাকিবের মধ্যে প্যাশনটা আছে।
আপনারা যারা ক্রিকেট খেলেছেন, তারা খুব ভালো করেই জানেন, ক্রিকেট যতটা না ব্যাটবলের খেলা, তার থেকে ঢের বেশি মাথার। চিন্তার, এবং ম্যাচিউরিটির। সেশন ধরে ধরে ব্যাটল করা জানতে হয়। ভয় ডর এংজাইটি একপাশে ঠেলে দিতে হয়। সাকিব কিন্তু মাস্টারক্লাস ব্যাটসম্যান না৷ সাকিব শচিন, লারা না। সাকিব বোলিং এও আহামরি টার্নার না। খুব বশি ভ্যারিয়েশন যে ওর আছে, তাও না। ঐ একটা আর্ম বল। আর পিচ বুঝে পেস আর ফ্লাইট ভ্যারিয়েশন।
কিন্তু দেখেন নিজেকে সে কোন উচ্চতায় নিয়ে গেছ! এমন সব অদ্ভুত ইনিংস সে খেলেছে, এমন সময় এমন সব উইকেট সে নিয়েছে চিন্তাই করা যায়না। দেখেন লিটন,সৌম্য কিন্তু অসাধারন ব্যাটসম্যান, কিন্তু মানসিক ভাবে অত্যন্ত দূর্বল মানসিকতার মানুষ। পার্ফরমেন্স এংজাইটি তাদের মূল সমস্যা।
তারা কোথাও নিজেকে জগত সেরা ভাবেনা।
সবাইকে হারাবার জন্য মাঠে নামেনা। নামে ভালো ইনিংস খেলার জন্য, রান করার জন্য। ওভাবে হয়না। ভিতরে কিলার ইন্সটিংটটা থাকা লাগে। মাঠটা নিজের ভাবা লাগে। ভয় ডর নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে টিকে থাকা কঠিন।
মনে করেন, শ্রীলংকাকে হারিয়ে মুশফিকের নাগিন ড্যান্স, জিনিসটা আপনার দেখতে কিছুটা কুৎসিত লাগতে পারে। কিন্তু মুশফিক কিন্তু একটা ক্রিকেট দলকে একা হারিয়ে পিচের মাঝে নেচে বেড়িয়েছে। সে সময়ে তার মানসিক অবস্থাটা ভাবুন। যেন দ্য রাম্বল ইন দ্য জাংগলে সমস্ত অডের এগেইন্সটে বুড়ো মুহাম্মদ আলী, জো ফোর ম্যানকে হারিয়ে রিং এ পাগলের মতন নেচে বেড়াচ্ছে! ইন্টারন্যাশনালে এই জিনিসটাই দরকার। এই ইনভলভমেন্ট, মনের এই এগ্রেসিভ প্যাটার্ন, এই জেতার ক্ষুধা।
(বিদ্রঃ লেখার উদ্দেশ্য খেলার মাঠে কারো অন্যায় আচরণ সমর্থন করা না। স্পোর্টস সাইকোলজি নিয়ে ক্ষুদ্র একটা লেখা। )
(ফেসবুক থেকে নেয়া)
news24bd.tv/আলী