সঞ্চয়পত্রের যে বিষয় জানা জরুরি

সঞ্চয়পত্রের যে বিষয় জানা জরুরি

অনলাইন ডেস্ক

সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীর জন্যই নিরাপদ বিনিয়োগের নাম হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। আবার নিশ্চিত ও সর্বোচ্চ মুনাফার দিক থেকেও সঞ্চয়পত্র সবচেয়ে আকর্ষণীয়, অন্তত ব্যাংকে স্থায়ী আমানত এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তুলনায়।   ​বাংলাদেশে পাঁচ ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। মেয়াদ অনুযায়ী এসব সঞ্চয়পত্রের মূল্য ও মুনাফা পৃথক হয়ে থাকে।

এবার তাহলে সঞ্চয়পত্রের ধরন সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-

বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদী) 

পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এটি দেশের সবচেয়ে পুরোনো সঞ্চয়পত্র। ১৯৭৭ সালে চালু হয় এটি। দেশের যেকোনো নাগরিক কিনতে পারেন এটি।

বাজারে ১০, ৫০, ১০০ ও ৫০০ টাকা; ১০০০, ৫০০০, ১০০০০, ২৫০০০ ও ৫০০০০ টাকা এবং ১ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। ব্যক্তির ক্ষেত্রে একক নামে ৩০ লাখ ও যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। তবে প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো সীমা নির্ধারিত নেই।

মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র (৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক) :

তিন বছর মেয়াদী ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এটি। এর মুনাফার হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ। এটি চালু হয় ১৯৯৮ সালে। পাওয়া যায় ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানে। বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মতো এটিও সবাই কিনতে পারেন। এই সঞ্চয়পত্র একক নামে ৩০ লাখ টাকা ও যৌথ নামে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়।

পরিবার সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদী) :

পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র এটি। এতে মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। সঞ্চয়পত্রটি বিক্রি হয় ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার, ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানে। ২০০৯ সালে চালু হওয়া এ সঞ্চয়পত্র থেকে মাসিক মুনাফা নেওয়ার সুযোগ আছে। এক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। তবে সবাই এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। কেবল ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী যেকোনো বয়সী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী-পুরুষ এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদী) :

পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র এটি। এর মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ শ্রেণিতে ৫০ হাজার, ১ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের পাঁচ ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে। ২০০৪ সালে চালু হওয়া এ সঞ্চয়পত্র থেকে তিন মাস পরপরও মুনাফা তোলা যায়। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানরাই শুধু এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।

ডাকঘর সঞ্চয়পত্র (৩ বছর মেয়াদী) :

সঞ্চয়পত্রটি শুধু ডাকঘর থেকে লেনদেন করা হয়। তিন বছর মেয়াদী ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। ডাকঘর থেকে এ সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়ন করা যায়। যে কেউ এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।


আগামী ১ জুলাই থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের সুবিধা একটু বাড়বে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সঞ্চয়কারীদের জন্য বাজেটে যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা সেভাবেই যদি পাস হয়, তাহলে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের সুবিধা পাওয়া নিশ্চিত হবে।

সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক ও ডাকঘর সঞ্চয় হিসাবের গ্রাহকদের জন্য অর্থমন্ত্রী আগামী ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে সামান্য বাড়তি সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দেন। সেটি হলো, এখন থেকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ছাড়াই সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় হিসাবে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ। এত দিন টিআইএন ছাড়া এক লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেত।

news24bd.tv/আলী