দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করতে পারলে কর্মসংস্থানের অভাব হবে না

দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করতে পারলে কর্মসংস্থানের অভাব হবে না

অনলাইন ডেস্ক

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করতে পারলে দেশে ও দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের অভাব হবে না। করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপি সাধারণ চাকুরির সুযোগ সংকোচিত হলেও দক্ষ আইটি প্রফেশনালদের চাকুরির চাহিদা দেশে ও বাইরে বাড়ছে।

বাংলাদেশ ডিজিটাল অবকাঠামোসহ ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করলেও শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। এই লক্ষ্যে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে ডিজিটাল শিক্ষা প্রদানের বিকল্প নেই।

তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রী গত রাতে ঢাকায় অতীশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘কোভিডকালে চাকুরির সুযোগ এবং আইটি খাতের চ্যালেঞ্জ’  বিষয়ক ওয়েবিনারে প্রদান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অতীশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান মো: লিয়াকত আলী সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাসিম আক্তার.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজ মো: হাসান বাবু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো: নাসির উদ্দিন এবং স্যামসন আরএন্ডডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আসাদ বক্তৃতা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা ডিজিটাল এজ হিসেবে পরিণত হওয়ার একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।


নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে না পারলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব হবে না উল্লেখ করে কম্পিউটার বিপ্লবের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা,রোবটিক্স, আইওটি, ব্লকচেইনসহ আগামী দিনের প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য ডিজিটাল দক্ষতা তৈরি করা অপরিহার্য। এই ক্ষেত্রে জনগোষ্ঠীর সবাইকে বিশেষজ্ঞ হতে হবে না ন্যুনতম ডিজিটাল দক্ষতা না থাকলে টিকে থাকতে পারবো না।

ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রচেষ্টা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে উল্লেখ করে কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আমরা ৬শত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রোগ্রামিংসহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানের একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি। গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। অতীতের  তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও আজকের বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশ গ্রহণের জন্য সম্পুর্ণভাবে তৈরি। ২০২১ সালের মধ্যে ফাইভ-জি প্রযুক্তি দৃশ্যমান হবে যা অনেক দেশ চিন্তাও করতে পারেনি। করোনাকালে আমরা শতকরা ৯০ভাগ মোবাইল টাওয়ার ৪জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। বছরে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। দেশীয় মোবাইল কারখানা থেকে ৫জি মোবাইল উৎপাদন হচ্ছে এবং বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশের শতকরা সত্তর ভাগ মোবাইলের চাহিদা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। দেশে ৬শত ডিজিটাল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় কোভিডকালে ঘরে বসে অফিস আদালত পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটিও অন লাইনে পড়া লেখা করতে পারছে। হাওর, দ্বীপ ও প্রত্যন্তচরসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইভারের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার কাজ সমাপ্ত প্রায়। মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন, টিন্ডটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা এবং আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্য পদ গ্রহণ এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয় করণের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ এবং কম্পিউটারে উপর থেকে ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

সভাপতির বক্তৃতায় লিয়াকত আলী সিকদার বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে হবে। শিশু শ্রেণি থেকে কম্পিউটার শিক্ষা প্রচলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার এর বক্তব্যকে ঐতিহাসিক দিকনির্দেশনা উল্লেখ করে বলেন, ছোট বেলায় আমরা শুনে ছিলাম বাংলা ভাষা কম্পিউটারের ভাষা হতে পারে না এবং কম্পিউটারে বাংলা ভাষা ব্যবহার সম্ভব হবে না । কিন্তু জনাব মোস্তাফা জব্বার সেই মাতৃভাষাকে কম্পিউটারের উপযোগী করতে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন, কর্ম জীবন, আর্থিক জীবন জলাঞ্জলি দিয়ে দিনের পর দিন গবেষণা করেছেন এবং তার অবদান স্বরূপ মাতৃভাষাকে কম্পিউটারের উপযোগী করেছেন। তিনি গত ১২ বছরে ডিজিটাল কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বিস্ময়কর উল্লেখ করে বলেন, শেখ হাসিনা নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বিরোধীদলে থেকেও তথ্যযোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশে কাজ করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে টুঙ্গিপাড়ায় সে সময় একটি সেমিনারে জননেত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকেছেন এবং সেমিনারে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জনাব মোস্তাফা জব্বার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উল্লেখ করে লিয়াকত সিকদার বলেন,ডিজিটাল বিপ্লবে জননেত্রী শেখ হাসিনার পেছনে থেকে জনাব মোস্তাফা জব্বার কয়েক দশক ছায়ার মতো কাজ করেছেন।

বক্তারা ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষা সম্প্রসারণে সরকারের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা মনে করেন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবি। তারা উপযুক্ত পরিবেশ পেলে দক্ষ মানব সম্পদে সম্পদে পরিণত হবে। তারা আলোচকদের আলোচনাকে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে বলে।

আরও পড়ুন:

পাত্র চেয়ে আজব বিজ্ঞাপন তরুণীর, অতঃপর যা ঘটল...

জাতীয় স্মৃতিসৌধে নতুন সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়

ওবায়দুল কাদেরকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করবেন কাদের মির্জা

news24bd.tv/এমিজান্নাত