মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্বসেরা দীপিকা

মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্বসেরা দীপিকা

অনলাইন ডেস্ক

ছোটবেলায় গাছে আম ঝুলতে দেখলেই নাকি ঢিল ছুড়ে নামিয়ে আনতেন তিনি। তার লক্ষ্য ছিল এতটাই স্থির। লক্ষ্য পূরণে তাই সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে দু’বার ভাবেননি। প্রয়োজনে চোখে চোখ রেখে লড়ে গিয়েছেন।

সেই লড়াই তাকে নিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। সারাবিশ্বের সামনে লক্ষ্যভেদ করে নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। শাণিত তীরের মতোই উজ্জ্বল তীরন্দাজ দীপিকা কুমারী।

আজ তিনি বিশ্বের এক নম্বর তীরন্দাজ।

তাকে এক ডাকে চেনে সারা বিশ্ব। অথচ এক সময় নিজের ছোট গ্রামেও পাড়া-প্রতিবেশী ছাড়া তার নাম জানতেন না কেউ।

দীপিকার জন্ম ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর এক দরিদ্র পরিবারে। রাঁচী থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তার গ্রাম রাতু ছাত্তি। বাবা শিবনারায়ণ মাহাতো ছিলেন একজন অটোচালক। মা গীতা মাহাতো রাঁচী মেডিকেল কলেজের নার্স ছিলেন।

কষ্টের সংসারই তার লক্ষ্য পূরণে প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মাস গেলে দেড় হাজার টাকা ছিল সংসারের মোট উপার্জন। এই নামমাত্র টাকায় কী আর মেয়েকে তীরন্দাজ করার কথা ভাবতে পারেন কেউ!

কিন্তু দীপিকা হার মানার পাত্রী ছিলেন না। অনুশীলনের প্রথম ধাপ তাই শুরু হয় গ্রামের আমবাগান থেকে। নিখুঁত নিশানায় ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে আম পাড়া ছিল তার কাছে অতি সামান্য ব্যাপার। এভাবে লক্ষ্যভেদের অনুশীলন শুরু করেন দীপিকা।

মেয়ের দক্ষতা নজরে আসে তার মা-বাবারও। তাকে বাঁশের তীর-ধনুক বানিয়ে দেন তারা। সেই তীর-ধনুক দিয়েই অনুশীলন শুরু করেন তিনি।

২০০৫ সালে ঝাড়খণ্ডের খারসওয়ানে একটি তীরন্দাজ অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন তিনি। ভর্তি হওয়াটা অত সহজ ছিল না।

এই অ্যাকাডেমি ছিল ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার স্ত্রী মীরা মুণ্ডার। প্রথমে এই অ্যাকাডেমিতে ভর্তি নেওয়াই হচ্ছিল না। দীপিকার বয়স তখন মাত্র ১১।

news24bd.tv

ওই বয়সেই সরাসরি মীরার চোখে চোখ রেখে দীপিকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন।

“আমাকে ৩ মাস সময় দিন। আমি যদি ভাল পারফর্ম করতে না পারি তাহলে তাড়িয়ে দেবেন,” ঠিক এ কথাটাই বলেছিলেন দীপিকা। ওই ৩ মাসের মধ্যেই নিজেকে প্রমাণও করেছিলেন।

তবে তার পেশাগত তীরন্দাজ জীবন শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে। ওই বছর জামশেদপুরের টাটা আর্চারি অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পান তিনি। সেই প্রথম সঠিক সরঞ্জাম নিয়ে তীরন্দাজির অনুশীলন শুরু করেন।

সেখানে মাসে ৫০০ টাকা ভাতাও পেতেন। তীরন্দাজিই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। সব কিছু ভুলে একাগ্র চিত্তে অনুশীলন করে গিয়েছেন শুধু।

পরিশ্রমের ফল কখনও বৃথা যায়নি। ৩ বছর পর ২০০৯ সালে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তার হাতে ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি।


ভায়াগ্রা ভেবে ভুল ওষুধ খেয়ে মৃত্যু

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধের সময় আরও বাড়ল

বসুন্ধরা কিংসের গোল উৎসব

স্বপ্নে এসে একাধিকবার ধর্ষণ, তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে নারীর অভিযোগ


গ্রামের আমবাগানগুলো আজ সুরক্ষিত। ঝাড়খণ্ডের ওই গ্রামে এখন থাকার সময়ই নেই তার। কখনও তুরস্ক কখনও মেক্সিকো তো কখনও চীন, আমেরিকা। বিশ্বের নানা প্রান্তে লক্ষ্যভেদ করতে ছুটে চলেছেন দীপিকা।

বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় একাধিক সোনা জিতেছেন তিনি। ২০১২ সালে অর্জুন পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন তিনি।

২০১৭ সালে তাকে নিয়ে ‘লেডিস ফার্স্ট’ নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পায়। তার বায়োপিক বানানোরও কথাবার্তা চলছে।

২০২০ সালে তিরন্দাজ অতনু দাসকে বিয়ে করেন দীপিকা। ২ বছরের প্রেমের পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

সূত্র: আনন্দবাজার

news24bd.tv / নকিব