ফেরত আনা হয়েছে খালাস হওয়া বিটুমিন

সনদ জালিয়াতি করে বিটুমিন খালাস, তদন্ত কমিটি গঠন

Other

মান পরীক্ষায় ফেল কিন্তু সনদ জালিয়াতি করে কয়েক লাখ ডলারের বিটুমিন খালাস। এমনই ঘটেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। আর এই জালিয়াতির বিষয় হাতে নাতে ধরে, ছাড় হওয়া ৯টি সহ পুরো চালান আটকের নির্দেশ দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এর রেশ গড়িয়েছে, জাতীয় সংসদেও। এসব ভূয়া আমদানিকারকদের জালিয়াতির নেটওয়ার্ককে ধরতে, সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এদিকে, আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমস। ফেরত আনা হয়েছে খালাস হওয়া সব বিটুমিন।
 

ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের একটি বাণিজ্যিক চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে ১৪ জুন। এই চালানে ৫০টি কনটেইনারে প্রায় এক লাখ টন বিটুমিন আসে। যার মূল্য চার লাখ ১৭ হাজার মার্কিন ডলার।

‘এমভি নেগার’ নামে ইরানি পতাকাবাহী জাহাজ থেকে নামিয়ে গত ২০ জুন বিটুমিনের চালানটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনাটি পাঠানো হয় সরকারি ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। ইআরএল গত ২৪ জুন পণ্যের মান সনদ দেয়। সেখানে বলা হয়েছে, বিটুমিন মান যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। কারণ, ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিনের ঘোষণায় আনা হয়েছে ৮০-১০০ গ্রেডের।

কিন্তু কাস্টমসে জমা পড়েনি, আসল পরীক্ষার সনদ। জমা পড়েছে, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সানশাইন এজেন্সির তৈরি করা নকল সনদ। যেখানে জালিয়াতি করে সব ঠিকঠাক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে, সিএন্ডএফ এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা জানান, ভূয়া সনদের বিষয়টি জানা নেই।

তবে, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড বলছে, পুরো প্রক্রিয়াটি জালিয়াতির মাধ্যমে হয়েছে। এটা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।

এ ঘটনা গড়িয়েছে জাতীয় সংসদেও।  

এরই মধ্যে খালাস হওয়া বিটুমিন ফিরিয়ে এনেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। জালিয়াতির মাধ্যমে নিন্মমানের বিটুমিন ছাড়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনা উদঘাটন করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার। বাকি দুইজন হলেন একজন উপ কমিশনার, একজন সহকারী কমিশনার।  

তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরই আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। এর আগে ঘটনার ‘নাটের গুরু’ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের তাহের চেম্বারের সান শাইন এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। গেল ২৫ মে বিটুমিনের মান নিশ্চিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি নির্ধারিত ল্যাবে মান পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে। এরপর থেকেই মূলত নিম্নমানের বিটুমিন আমদানির চক্রটি বিপাকে পড়ে।  

এর আগে মান পরীক্ষায় বাধ্যবাধকতা না থাকার সুযোগে,দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের ভেজাল বিটুমিন আমদানি হয়ে আসছিল। তবে, জালিয়াতি ধরা পড়ার ঘটনায়, এখন থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মান যাচাই এর সনদ এজেন্টর পাশাপাশি ইআরএল থেকেও গ্রহণ করবে।  

news24bd.tv/আলী