মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসতে আরো দিন দশেক বাকি। শুরু হবে মৌসুমী ফলের উৎসব। তবে বরাবরই ফলের রাজ্যে লিচুই প্রথমে বাজারে আসতে শুরু করে। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি।
সপ্তাহখানেক থেকেই রাজশাহীর বাজারে লিচু উঠতে শুরু করেছে। তবে ব্যাপক হারে নয়। আবার যে লিচু বিক্রি হচ্ছে তা রসে টইটম্বুরও হয়নি। সবেমাত্র সুবজ রঙ লালচে হয়ে উঠছে।
কেউ কেউ আগাম নিজের পরিবারের সদ্যদের নিয়ে লিচু খাওয়ার জন্য তাই কিনে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম লিচু বাজারে নিয়ে আসলে একটু বাড়তি দাম পাওয়া যায়। যখন বাজারে লিচুর সমাহার ঘটবে তখন দামও কমে যাবে।
অন্যদিকে, লিচু বাগান ব্যবসায়ীরা বলছেন, লিচু পুরোপুরি পাকতে আরো সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। এ বছর রাজশাহীতে প্রতি কেজিতে গড়ে ২০ পিস ধরে চার টনেরও বেশি লিচু উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
রসে টইটম্বুর ফল হিসেবে লিচুকে ধরা হয়। মৌসুমী ফলগুলোর মধ্যে এপ্রিল মাসের শেষের দিক থেকেই লিচু বাজারে উঠতে শুরু করে। অধিক দামও পায় চাষী ও ব্যবসায়ীরা। তাইতো জ্যৈষ্ঠের ফল হলেও আগাম বাজারে আসতে শুরু করেছে।
রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, কোটবাজার, শালবাগান, বিনোদপুর বাজার এলাকায় লিচু বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। সেই সাথে ভ্যানে করেও বিভিন্ন মহল্লায় লিচু বিক্রি হচ্ছে। যার যেমন সাধ্য তাই কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। স্বাদ তেমন না হলেও মৌসুমী ফল আগাম খেতে পারছেন বলেও ক্রেতাদের অভিমত।
কৃষি বিভাগ বলছে, গেল কয়েক বছর থেকে রাজশাহীতে লিচু চাষ খুব বেড়েছে। একটা সময় ছিল পাবনার ঈশ্বরদী ও দিনাজপুরের লিচুর উপর নির্ভর করে থাকতে হতো এ অঞ্চলের মানুষদের। কিন্তু এখন তেমন হয় না। এখন ছোট-বড় মিলিয়ে রাজশাহীতে ৯০টিরও বেশি লিচু বাগান হয়েছে। বাগান ছাড়াও বসতবাড়িতে দেশি লিচুর পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল চায়না-৩ এবং বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচু চাষ হচ্ছে।
মহানগরীর রায়পাড়া, বুলনপুর, ছোটবনগ্রাম ও কাটাখালি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়েছে। এছাড়া জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলাতেও চাষ হচ্ছে লিচুর। এবার মাঝে মধ্যে ঝড় হলেও লিচুর ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর