স্বজন ও ড্রাইভার উধাও, করোনায় মৃতের লাশ পড়ে রইল অ্যাম্বুলেন্সে

স্বজন ও ড্রাইভার উধাও, করোনায় মৃতের লাশ পড়ে রইল অ্যাম্বুলেন্সে

অনলাইন ডেস্ক

রাস্তার পাশে অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে আছে লাশ। পরিবারের কেউ কাছে যাচ্ছেন না। অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারও উধাও; পাওয়া যাচ্ছে না কাউকে। এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সিলেটর উসমানী নগরের সাদীপুর গ্রামে।

পরে মৌলভীবাজারের শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ) ইসলামী সোসাইটি (বিআইএস) মৃতের দাফন ও সৎকার টিমের সাহায্য নিয়ে লাশ দাফন করা হয়।

লাশ গোসল করার জন্য কেউ রাজি হচ্ছেন না। নারীর লাশ তাই কোনো পুরুষ সহযোগিতা করতে পারবে না। তখন মৃত নারীর মেয়েকে বুঝিয়ে গোসল করাতে রাজি করা হয়, বাইরে থেকে সহযোগিতা করেন টিমের সদস্যরা।

পাওয়া যাচ্ছিল না কবর খনন করার মতো কাউকেও। তখন কবর খনন করার অভিজ্ঞ দুজনকে রাজি করিয়ে দাফনে সহায়তায় করা হয়।

বুধবার (৩০ জুন) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত শোয়া মিয়ার স্ত্রী মোছা. আজিবুন নেছা টুনু সাড়ে ৬টায় সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনা ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন।

news24bd.tv

জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ বাড়িতে আনার পর ড্রাইভারও গাড়িতে লাশ রেখে উধাও হয়ে যায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা করোনায় মৃত্যুর কারণে তার কাছেও আসতে চাননি। পরে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ) ইসলামী সোসাইটি (বিআইএস) মৌলভীবাজার এর দাফন-কাফন ও সৎকার টিমের সঙ্গে। রাত ১০ টা থেকে শুরু করে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে দাফন।

সংগঠনের দপ্তর সচিব সিরাজুল হাসান বলেন, মৃতের পরিবার থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করেন। আমি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম মুহিবুর রহমান মুহিবকে জানাই। সংগঠনের দাফন কাফন ও সৎকার টিম প্রস্তুতি গ্রহণ করে রাত ১০টায় টিম নিয়ে সাদীপুর গ্রামে পৌঁছাই। গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে অ্যাম্বুলেন্স এর মধ্যে লাশ পরে আছে। কেউ নেই পাশে, ড্রাইভারও নেই।

news24bd.tv

দাফনকাজে অংশগ্রহণ করেন শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ) ইসলামী সোসাইটি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম মুহিবুর রহমান মুহিব, টিম লিডার আশরাফুল খান রুহেল, সাংগঠনিক সচিব সোহান হোসাইন হেলাল, টিম মেম্বার মাহবুবুর রহমান খান অপু, ইয়াসিন তালুকদার, সিরাজুল ইসলাম, আমির হোসেন, নাঈম তালুকদার, কামরান আহমেদ চৌধুরী, তিতুমীর আহমেদ, রাফি খান।

শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ) ইসলামী সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, রাস্তায় পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স থেকে লাশ নিয়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে যাই। রাস্তায় পানি আর কাদা একাকার ছিল, কারণ এ বছরের মধ্যে আমাদের এলাকায় গতকালকেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। দাফন-কাফনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজে সংগঠনের কর্মীরা কাজ করেন। লাশ বাড়িতে নিয়ে দেখা যায় গোসল করানোর মতো কোনো নারী পাওয়া যাচ্ছে না। তখন তার মেয়েকে বুঝিয়ে রাজি করি।

news24bd.tv

তিনি আরও বলেন, আমাদের সদস্যদের সহযোগিতায় কবর খনন করা হয়, কিন্তু দুঃখের বিষয় করবের নিচ থেকে উঠতে থাকে শুধু পানি আর পানি। রাত ২ টায় ঢাকা সিলেট মহাসড়কে জানাজার নামাজ পড়ে কোনো রকম বালতি দিয়ে পানি সরিয়ে আজিবুন নেছা টুনু-কে তার জীবনের প্রিয় আদর এবং ভালোবাসার মানুষগুলোর অনুপস্থিতিতেই শুধু ছেলে বিহীন তিন মেয়ের ঘরের ছোট ছোট নাতীদের উপস্থিতিতে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

আরও পড়ুন:


কঠোর লকডাউনেও স্বাভাবিক মোংলা বন্দর

মাদারীপুরে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চলে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে

বগুড়ায় করোনায় ১১জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১০০


news24bd.tv / তৌহিদ