বিভিন্ন জেলায় ১৪২ জনের মৃত্যু

বিভিন্ন জেলায় ১৪২ জনের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বব্যাপাী তাণ্ডব চালানো প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ছোবলে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গেল এক সপ্তাহে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে ১৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, চুয়াডাঙ্গা, জয়পুরহাট, রাজবাড়ী, বরিশাল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে তারা মৃত্যুবরণ করেন।

সারাদেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে এ চিত্র উঠে আসে।

রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আরও ১৯ জন মারা গেছেন। সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে মারা যান তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৯ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আর ১৫ জন উপসর্গে মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে একজন করে মারা গেছে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও পাবনয়ে। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৯ জন এবং নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং জয়পুরহাটের একজন করে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ার তিন হাসপাতালে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৫ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

বগুড়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. টি এম নুরুজ্জামান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎধীন অবস্থায় ৫ জন মারা গেছেন।

এ ছাড়া বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিনিধি আব্দুর রহিম রুবেল জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ওই হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মমেক) করোনা ইউনিটে সোমবার (৫ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জন করোনায় এবং ৪ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  

মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৩ জন মারা গেছেন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৪ জন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আইসিইউতে ২২ জনসহ মোট ৩০০ রোগী করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫০ জন।

খুলনা
খুলনার তিন হাসপাতালে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে করোনায় ১৩ জন এবং উপসর্গে ৪ জন মারা গেছেন।

খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৮ জন, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন ও জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮০ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০৯ জন, ইয়ালো জোনে ৩১ জন, আইসিইউতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪০ জন।

গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৩৪ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। পিসিআর ল্যাবে ৬২টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮ জনের করোনা  শনাক্ত হয়েছে।

খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। তার মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ৩৪ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৪ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ জন।

কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জন করোনায় এবং ৪ জন উপসর্গে মারা গেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. অনুপম ভট্টাচার্য।

ডা. অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১২০টি শয্যা থাকলেও বর্তমানে ১৩০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) এবং বাকিরা সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছয় দিনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১০০-তে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১১৪ জন।

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার।

তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। যাদের মধ্যে তিনজন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, রংপুর সদর হাসপাতালে একজন ও ঠাকুরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একজন মারা গেছেন।

কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১৭ জনের। এ সময় ১ হাজার ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এটিই এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ১৪ জন, কুমারখালীর ২ জন ও খোকসা উপজেলার ১ জন।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সব উপজেলায় হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। লকডাউনের মধ্যেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে রাস্তাঘাটে চলাচল করছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ফলে লকডাউনের সুফল মিলবে না।

টাঙ্গাইল
টাঙ্গাই‌লে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় ক‌রোনা ও উপসর্গে ৭ জ‌নের মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে। এ সময় ৭১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪১৩ জ‌নের শরী‌রে ক‌রোনাভাইরাস শনাক্ত হ‌য়ে‌ছে। শনাক্তের হার ৫৭ দশমিক ৯২ শতাং‌শ। এটিই জেলায় সর্বোচ্চ শনাক্ত।

টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সা‌দিকুর রহমান ঢাকা পোস্ট‌কে ব‌লেন, গেল ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল‌টি‌তে চি‌কিৎসাধীন অবস্থায় ক‌রোনায় আক্রান্ত হ‌য়ে ৩ জ‌ন ও উপসর্গ নি‌য়ে ২ জন মারা গে‌ছেন। এ ছাড়া অন্যান্য জায়গায় আ‌রও ২ জনের মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে।

চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০১ জনে। এ দিন ৩৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৯৪৫ জনে।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এএসএম ফাতেহ আকরাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন সদর হাসপাতালের রেডজোনে এবং জেলার বাইরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া তিনজন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন আরও ৯ জন।

বরিশাল
বরিশাল বিভাগে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে ৪৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আরটি পিসিআর ল্যাবে শনাক্তের হার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানিয়েছেন, জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রমণ তথ্যে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায় ১৭৮ জন। এ পর্যন্ত এই জেলায় শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৩০ জন। ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় করোনা আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ১৩২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৬১৩ জন।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ঝালকাঠি জেলায় ১০৪ জন। পটুয়াখালীতে নতুন শনাক্ত হয়েছে ৩৬ জন। ভোলায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ১৪ জন। পিরোজপুরে নতুন শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জন। বরগুনায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ৪৩ জন।

জয়পুরহাট
জয়পুরহাট জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছে ৭৫ জন। সিভিল সার্জন ডা. ওয়াজেদ আলী ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, জেলায় আরটিপিসিআর ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৫ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। এই সময় সুস্থ হয়েছেন ৫৭ জন।

এ পর্যন্ত জেলায় মোট ২৫ হাজার ৫৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ৩ হাজার ৬৬৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মোট সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ১৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সদর উপজেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজবাড়ী
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জন করোনায় ও ৩ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, রাজবাড়ীতে করোনার ভয়াবহতা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই করোনা পজিটিভ ও করোনা উপসর্গ নিয়ে অনেক মানুষ হাসপাতালে আসছে। প্রথম অবস্থায় করোনা ইউনিট ২০ শয্যাবিশিষ্ট হলেও রোগীর চাপে তা এখন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, রাজবাড়ীতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭৬৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে ৪ হাজার ৪৮২ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুবরণ করেছে ৪৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে ৭৪ জন।

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬২ জন। যা একদিনের হিসাবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৯ জন। করোনা শনাক্তের হার ৩৫.০২ শতাংশ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামের ১১টি ও কক্সবাজারে একটি ল্যাবে ১ হাজার ৮৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ৪৪৯ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ২১৩ জন রয়েছেন।

উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে লোহাগাড়ায় ১০ জন, সাতকানিয়ায় একজন, বাঁশখালীতে ৯ জন, চন্দনাইশে দুজন, পটিয়ায় আটজন, আনোয়ারায় ছয়জন, বোয়ালখালীতে ১০ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১৩ জন, রাউজানে ২০ জন, ফটিকছড়িতে ৩২ জন, হাটহাজারীতে ২১ জন, সীতাকুণ্ডে ৪১ জন, মিরসরাইয়ে ৩৮ জন ও সন্দ্বীপে দুজন।

চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৫৮৯  জন। মোট শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৭ হাজার ৮৩০ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১৩ হাজার ৭৫৯ জন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে নয় জন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দা দুজন,  নগরের বাইরের বাসিন্দা সাত জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৭৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮৪ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২৪৭ জন।