চাঁদা বাকি থাকায় লাশ দাফন করতে দেয়নি সভাপতি!

ফাইল ছবি

চাঁদা বাকি থাকায় লাশ দাফন করতে দেয়নি সভাপতি!

অনলাইন ডেস্ক

এলাকার মসজিদের পাঁচ মাসের মাসিক চাঁদা বকেয়া থাকায়  মো. ইরফান উদ্দিনের (৩০) লাশ সামাজিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আক্কাস আলী (৩৫)। এমন কি মৃত ব্যক্তির লাশ বহন করতে মসজিদের খাটিয়া নেয়া হলে তা কেড়ে নিয়ে আসেন। এমনকি মসজিদের ইমামকেও মৃতের জানাজা নামাজের ইমামতি করতে বাঁধা দেয়া হয় এবং মৃত ব্যক্তির নামে মসজিদের মাইকে মাইকিং পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি।

পরে নিরুপায় হয়ে মৃতের পরিবার রাস্তার পাশে অন্যের জায়গায় জন্ডিস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি মো. ইরফান উদ্দিনের (৩০) লাশ দাফন করেন।

 

বুধবার সকাল ৯টায়  বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইয়াংছা বদুরঝিরি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  

বদুরঝিরি এলাকার মসজিদের সভাপতি মো. আক্কাস আলী এই অমানুষিক কাজটি করে। তিনি বদুরঝিরি এলাকার নুরুল আলমের ছেলে।

জানা যায়, বদুরঝিরি এলাকার মো. আকবর এর ছেলে মো. ইরফান উদ্দিন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পার্শ্ববর্তী চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন।

সেখানে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি হলে তাকে কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে মঙ্গলবার দিনগত রাত ৯টায় তার মৃত্যু হয়। পরে মৃতের পরিবার রাতেই তার লাশ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

ইরফান উদ্দিনের শ্বশুর কবির আহাম্মদ বলেন, খাটিয়া নেয়া ও সামাজিক কবরস্থানে লাশ দাফনের অনুমতি নিতে আমরা কয়েকজন রাত ১টায় মসজিদের সভাপতি মো. আক্কাস আলীর বাড়িতে যাই। অনেক ডাকাডাকি করলেও তিনি ঘুম থেকে উঠেনি। আমরা রাতেই লাশের গোসল ও লাশ বহনের জন্য বদুরঝিরি মসজিদের লাশবাহী খাটিয়াটি ইমামের অনুমতিতে নিয়ে আসি।

বুধবার সকালে আক্কাস আলী বাড়িতে লোক পাঠিয়ে খাটিয়াটি নিয়ে যায় এবং বলে দেয় সামাজিক কবরস্থানে ইরফান উদ্দিনের লাশ দাফন করা যাবে না। কারণ তার মসজিদের চাঁদা বকেয়া আছে। পরে ইয়াংছা জামে মসজিদের খাটিয়া এনে লাশ বহন করে নিয়ে রাস্তার পাশে অন্যের পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করি।

এ বিষয়ে বদুরঝিরি মসজিদের সভাপতি আক্কাস আলী জানান, দুই বছর আগে ইরফান ও তার শ্বশুরকে সমাজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তারা সমাজের কোনো ধরনের চাঁদা দেয়নি। এই কারণে আক্কাস আলীকে সমাজের কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি।

তবে তার বক্তব্য সত্য নয় বলে জানায় মসজিদের অন্যান্য মুসল্লিরা।

ওয়ার্ড মেম্বার কামাল উদ্দিন বলেন, আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইয়াংছা বদুরঝিরি মসজিদে সবাইকে নিয়ে বসে সমস্যাটির সমাধান করা হবে। সমাজে বিষয়টি সমাধান না হলে লামা থানার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

news24bd.tv/আলী