ফুটবল ইতিহাসে প্রথম ইউরো ফাইনালে ইংল্যান্ড

ফুটবল ইতিহাসে প্রথম ইউরো ফাইনালে ইংল্যান্ড

অনলাইন ডেস্ক

১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর আবারও কোনো বৈশ্বিক আসরের ফাইনালে উঠলো ইংল্যান্ড। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারালো থ্রি লায়নরা। ৫৫ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো ইংল্যান্ডের। আর এই হার দিয়ে শেষ হলো ডেনমার্কের এবারের ইউরোর স্বপ্নযাত্রা।

তবে ইতিহাস বিপক্ষে ছিল ইংল্যান্ডের। ডেনমার্কের বিপক্ষে প্রায় দুই দশক কোনো জয় ছিল না থ্রি লায়নদের। কিন্তু এসব সমীকরণ আর প্রত্যাশার অসীম চাপকে মাটি চাপা দিয়ে দুর্দান্ত এক জয়ে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম ইউরো ফাইনালে ইংল্যান্ড।

ম্যাচের ৩০ মিনিটে ডি বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় অতিথিরা।

ওয়েম্বলির গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দিয়ে ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করেন ডেনমার্কের ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার মিকেল ড্যামসগার্ড। লিড পায় ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের দল। আসরে প্রথমবারের মতো ভাঙন ধরে ইংল্যান্ডের ডিফেন্সে। গোল হজম করেন জর্ডান পিকফোর্ড।

অবশ্য এক গোল হজম করে তেতে ওঠে ইংল্যান্ড। বাড়ায় আক্রমণ। ৩৮ মিনিটে হ্যারি কেইন দারুণ এক পাস দেন রাহিম স্টারলিংকে। এই ম্যান সিটি তারকা শটও নেন পোস্টে। কিন্তু ডেনমার্ক গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেল অসীম বীরিত্বে রুখে দেন সেই গোল।

তারপর মিনিটেই আবারো একই ভাবে আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড। এবারো কেইনের বাড়ানো বল যায় বুকায়ো সাকার কাছে। তিনি বল বাড়ান স্টারলিংয়ের কাছে। স্টারলিং বল স্পর্শ করার আগেই তা রুখতে গিয়ে জালে পাঠিয়ে দেন ডেনমার্ক অধিনায়ক সিমন কায়ের। সমতা আনে ইংল্যান্ড। প্রাণ ফিরে আসে ওয়েম্বলিতে আর সেখানে থাকা ইংল্যান্ড দর্শকদের।

১-১ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ্বের খেলা। ডেনমার্ক-ইংল্যান্ডের গতিময় খেলার মধ্য দিয়ে শুরু হয়  দ্বিতীয়ার্ধ্ব। দু'দলই লিড বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে। দ্বিতীয়ার্ধ্বের শুরুতে প্রথম সুযোগটা আসে ডেনমার্কের। ৫১ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে গোলের জন্য শট নেন এবারের আসরে তিন গোল করা ক্যাসপার ডলবার্গ। কিন্তু শট সরাসরি গিয়ে জর্ডান পিকফোর্ডের হাতে জমা হয়।

প্রতি আক্রমণে ভালই জবাব দিয়েছে ইংল্যান্ড। তারা এগিয়েও যেতে পারতো। কিন্তু বারবার স্বাগতিকদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান ডেনমার্কের পোস্টে দাঁড়ানো ক্যাসপার স্মাইকেল নামের এক দানব। ৫৫ মিনিটে মেসন মাউন্টের ফ্রি কিক থেকে হেড করেন হ্যারি ম্যাগুইয়ার। ডান পাশে উড়ে গিয়ে আলতো স্পর্শে দুর্দান্ত সেভ করেন ক্যাসপার স্মাইকেল।

ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের প্রতিটি আক্রমণে উৎহাস দেয় মাঠে আসা দর্শকরা। ম্যাচের ৭৫ মিনিটের পর ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ইংল্যান্ড। বলের দখলও থাকে তাদের কাছে। কিন্তু কোনোভাবেই ডেনমার্কের ডিফেন্সকে পরাস্ত করতে পারেনি গ্যারেথ সাউথগেটের দল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে জয়সূচক গোল করতে পারেনি কোনো দলই ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ্বের চার ও ৮ মিনিটে দুটি সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। প্রথমে হ্যারি কেইনের শট আটকে দেন স্মাইকেল। আর ৮ মিনিটে জ্যাক গ্রিলিশের শট ফিস্ট করে উড়িয়ে দেন স্মাইকেল। তবে এগারো মিনিটে ভুল করে বসেন মায়েল। ডি বক্সের ভেতরে রাহিম স্টারলিংকে ফাউল করে বসেন। ভিএআরে চেক করে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড।

বারবার ইংল্যান্ডের আক্রমণ রুখে দেয়া ক্যাসপার স্মাইকেল হ্যারি কেইনের শট রুখে দেন স্মাইকেল। কিন্তু ফিরতি শটে গোল করে পুরো ওয়েম্বলিকে আনন্দে ভাসান ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। পরের ১৫ মিনিটে আর গোল না হওয়ায় নিজেদেরত ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড।

news24bd.tv / কামরুল