দিলীপ কুমারের প্রয়াণের খবর শুনেই বুধবার সকালে মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় চলচ্চিত্রে একটা যুগের অবসান হল। শুধু এক জন কিংবদন্তি অভিনেতাই নন, ছিলেন অনুপ্রেরণাও। মনে পড়ে যাচ্ছিল অসংখ্য স্মরণীয় ঘটনা।
আমার প্রথম দেখা হিন্দি ছবি ছিল দিলীপ কুমারেরই অভিনীত গঙ্গা-যমুনা। সে দিন থেকেই আমি ওর ভক্ত। কল্পনাও করিনি, আমার স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে এক দিন দেখা হবে, কথা হবে। ১৯৭৪ সালে মোহনবাগানের হয়ে মুম্বইয়ে রোভার্স কাপ খেলতে গিয়েছি।
ম্যাচ চলকালীন বারবার কুপারেজের গ্যালারিতে চোখ চলে যাচ্ছিল। অনেক খুঁজেও দিলীপ কুমারকে দেখতে পাইনি। মনটা একটু খারাপই হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের পরের দিন আবার গিয়েছিলাম স্টুডিয়োয়। অনুযোগের সুরেই বলেছিলাম, খেলা দেখতে আসবেন বলেও এলেন না? কিংবদন্তি অভিনেতার উত্তর শুনে চমকে গিয়েছিলাম। জানালেন, গোল পোস্টের পিছনের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন। আমরা কেমন খেলেছি, তার বিশ্লেষণও করলেন। স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। ফুটবলের প্রতি ওর জ্ঞান ও ভালবাসা কতটা, সে দিন বুঝেছিলাম।
আরও পড়ুন:
কোভিড ব্যবস্থাপনায় ১৮৩০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব মমতার
লকডাউনের সপ্তম দিনে সরব ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জেসুসকে পাচ্ছে না ব্রাজিল
ফুটবলের প্রতি আবেগের আরও একটা পরিচয় পেয়েছিলাম শ্রীনগরে সন্তোষ ট্রফি খেলতে গিয়ে। সেই সময় ওখানে শুটিং করছিলেন দিলীপ কুমার। ব্যস্ততার মধ্যেও খেলা দেখতে আসতেন। ভাবিনি যে, আমাকে দেখে চিনতে পারবেন। অত বড় অভিনেতা অথচ সকলের সঙ্গে মিশতেন। মুখে সব সময় হাসি লেগে থাকত। ওকে দেখেই বুঝেছিলাম, পেশাদারিত্ব কাকে বলে। অভিনয়ের সময় চরিত্রের মধ্যে মিশে যেতেন। বলতেন, “যে কাজই করবে, হৃদয় দিয়ে করবে। তবেই সফল হবে। ” মাঠে এই পরামর্শ মেনে চলতাম।
আমার আর এক পছন্দের অভিনেতা ছিল দেব আনন্দ। এক বার রোভার্সে খেলতে গিয়ে তার শুটিং দেখতে নটরাজ স্টুডিয়োয় গিয়েছিলাম। আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছিল না নিরাপত্তারক্ষীরা। হঠাৎ দেখা দিলীপ কুমারের সঙ্গে। জিজ্ঞেস করলেন, “এখানে কী করছো? তোমাদের খেলা নেই?” বললাম, শুটিং দেখতে এসেছি। কিন্তু আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। উনি শুধু শুটিং দেখার ব্যবস্থাই করেননি, দেব আনন্দের সঙ্গে আলাপও করিয়ে দিয়েছিলেন।
সূত্র: আনন্দ বাজার পত্রিকা
news24bd.tv রিমু