নারায়ণগঞ্জে হাসেম ফুডসে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ৭০

নারায়ণগঞ্জে হাসেম ফুডসে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ৭০

অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল আল আরেফিন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে কারখানাটির শ্রমিকরা জানান, ৭০-৮০ জন শ্রমিক এখনো ওই ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন।

গতকাল রাত ২টা পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ জন নিখোঁজ শ্রমিকের সন্ধান চেয়ে পুলিশের কাছে স্বজনরা এসেছেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকালে সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ শুরু করে।  

শুক্রবার ভোরের দিকে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু সকালে ভেতরে আবার আগুন বেড়ে যায়।

সকাল সোয়া ১০টার দিকেও ছয় তলা কারখানা ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার সামনের দিকে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ


বগুড়ার শেরপুরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্বশুর নিহত

জন্মদিনে প্রায় ৩ কোটি টাকার গাড়ি কিনলেন রণবীর

‘নগদ’-এর পিন রিসেট করা যাবে নিজে নিজেই

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত


ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ভোর ৫টার দিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে সকাল ৬টার দিকে আবার কারখানার একপাশে কেমিক্যালের বিস্ফোরণ শুরু হওয়ায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ৬তলা ভবনটির মধ্যে চতুর্থ তলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ ৪তলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেনি।

তাদের দাবি, ৪তলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রাহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন।

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩২ জনকে উদ্ধার করে কর্ণগোপ ইউএসবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪) নামের দুই শ্রমিককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

গুরুতর আহত ১০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে মোরসালিন (২৮) নামের এক শ্রমিক মারা যান।

এছাড়া কারখানায় আটকা পড়া অন্তত ১২ জন শ্রমিককে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।

প্রথম দিকে আগুনে পুড়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানায় ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিক শ্রমিক। এর মধ্যে ১০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কারখানার আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন।

এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে ভবনের ভেতর থেকে প্যাকেট করা লাশ বের করা শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা।

এ সময় স্বজনরা, এলাকাবাসী ও বহিরাগতরা ধাওয়া করলে পুলিশ তাদের ছত্র ভঙ্গ করতে দফায় দফায় সর্টগানের গুলি ছু্ঁড়ে। এ পর্যন্ত দুইটি এম্বুলেন্সে ১৮ টি লাশ তোলা হয়েছে। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলো ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে। লাশ উদ্ধারের কাজের জন্য আরো বেশ কয়েকটা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখা হয়েছে।  

news24bd.tv নাজিম