ভোটের তারিখের মাত্র নয়দিন আগে সীমানা জটিলতা নিয়ে এক রিট আবেদনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
বিচারপতি নাঈমা হায়দার এবং বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ রোববার রুলসহ এই আদেশ দেয়।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে এই সিটির ভোট করতে সব প্রস্তুতি চলছিল। প্রধান দুটি দলসহ সব দলের প্রার্থীরাই পুরোদমে প্রচারও চালাচ্ছিলেন।
এই অবস্থায় আদালতের স্থগিতাদেশ আসার পর নির্বাচনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে গাজীপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
নির্বাচন কমিশন এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবে কি না- তাৎক্ষণিকভাবে সে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি ইসি কর্মকর্তারা।
ঢাকার সাভারের এক নম্বর শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ২০১৫ সালে এক নম্বর শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ ওই মৌজাগুলো গাজীপুর সিটি করপোরেশন থেকে বাদ দিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন।
কিন্তু এ ব্যাপারে ইসির সাড়া না পেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশন যেন তার আবেদনের নিষ্পত্তি করে- সেই আর্জি জানানো হয় তার রিটে।
হাই কোর্ট তখন নির্বাচন কমিশনকে তার আবেদনটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়ে আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দেয়।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন ওই বিষয়টি অনিষ্পন্ন রেখেই গত ৪ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করে এবং ৩ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করে।
এ প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের গেজেট, ৪ মার্চের গেজেট এবং ৩ এপ্রিলের তফসিল চ্যালেঞ্জ করে রোববার হাই কোর্টে রিট করেন আজহারুল ইসলাম।
তার আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার তিন মাসের জন্য ভোট স্থগিত করে দেয়।
সেইসঙ্গে দুই গেজেট এবং তফসিল কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
ইসি এখন কী করবে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, মহামান্য হাই কোর্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। কী কারণে এই নির্বাচন বন্ধ হয়েছে, সেটি স্থানীয় সরকার বিভাগের ভুল, নাকি কমিশনের ভুল- সেসব এখনও জানতে না পারলেও আদালতের নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে নির্বাচনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশন সচিব খুলনায় রয়েছেন। তারা ঢাকায় ফিরলে কমিশনের বৈঠকে বসবে। সেখানেই পরবর্তী করনীয় ঠিক হবে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)