এই কারখানাটিকে কী কী দেখে অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো?

এই কারখানাটিকে কী কী দেখে অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো?

Other

কারখানার দরোজায় তালা দেয়া থাকে, আগুন লাগলেও সেটি খুলে দেয়া হয় না, কেউ বের হতে পারে না- এইসব কথা অনেক অনেক আগে শোনা যেতো। তখন হরহামেশা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগতো। এখনো সেই কথাই শুনতে হচ্ছে কেন? কোনো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফ্যাক্টরি তো এমনিতেই কোথাও গড়ে উঠে না। তাদের নির্দিষ্ট কিছু নিয়মের ভেতর দিয়ে যেতে হয়, অনুমোদনের নানা ধাপ পেরিয়ে যেতে হয়।

যারা অনুমতি দেন- তারা কী কী দেখে অনুমোদন দেন? এই যে হাসেম ফুডস  কারখানায় আগুন লেগে ৫২ জনের বেশি মানুষ পুড়ে ছাই হয়ে গেলো, এই কারখানাটিকে কী কী দেখে অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো।  

পত্রিকায় পড়েছি  কারখানার মালিক না কি বলেছেন- ফ্যাক্টরি থাকলে শ্রমিক কাজ করবে, শ্রমিক থাকলে আগুন লাগবে। তার কথা কিন্তু সঠিক। শতভাগ সত্য এই স্টেটমেন্টেটার  আরো একটা অংশ আছে।

সেই অংশটুকু তিনি বলেননি। সেটি হচ্ছে  ‘কারাখানায় আগুন লাগলে যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়, হলেও  ন্যূনতম হয়, প্রাণহানি না হয়-  ফ্যাক্টরিকে সেটি নিশ্চিত করতে হয়। ’ হাসেম ফুডস কারখানা কী সেটি নিশ্চিত করেছিলো?

একটি কারখানা পরিচালনার জন্য দেশের প্রচলিত আইন যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে বলেছে, সেগুলো  কী তিনি করেছিলেন? হাসেম ফুডস কারখানা প্রচলিত আইনের সব নির্দেশনা অনুসরণ করছে কী না সেটি দেখভাল করার জন্য সরকারের একটি বিভাগ আছে, মন্ত্রনালয় আছে। তারা বছরের পর বছর বেতন পান- এই ফ্যাক্টরিগুলো তার শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করেছে কী না সেটি দেখভাল করার জন্যই। তারা সেটি করছেন কি? সরকারের কোনো সংস্থা সর্বশেষ কবে ফ্যাক্টরিটি  পরিদর্শন করেছিলো?

হাসেম ফুডস এর  কারখানায় পুড়ে ছাই হয়ে  যাওয়া ৫২ জন মানুষের লাশের দায়ভাগ কেবলমাত্র হাসেম ফুডস উপর চাপিয়ে দিলে সেটি সত্যভাষন হয় না। কারখানাটিকে যথাযথ নিয়মের মধ্যে রাখার,শ্রমিকদের নিরাপত্তা, স্বার্থ দেখার দায়িত্ব যাদের ছিলো তাদের অবহেলা, দায়িত্বহীনতাকেও এর জন্য দায়ী করতে হবে।

হাসেম ফুডস  কারখানার মালিক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এটা স্বস্তির খবর। সেই মামলায় সরকারের নানা বিভাগ মন্ত্রনালয়ের যারা তাদের নির্ধারিত দায়িত্ব পালন না করে এই হত্যাকান্ড ঘটার পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছে, তাদেরও  এই মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হোক।

(মত ভিন্ন মত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ

news24bd.tv/আলী