যারা রাতে দেবদাস পড়ে কেঁদে বুক ভাসায়নি, তারা কী বুঝবে দেবদাসের!

যারা রাতে দেবদাস পড়ে কেঁদে বুক ভাসায়নি, তারা কী বুঝবে দেবদাসের!

Other

দিলীপ কুমারের সম্মানে তার একটি ছবি দেখার ইচ্ছে হলো, কোনটা দেখবো কোনটা দেখবো ভাবতে ভাবতেই স্থির করলাম দেবদাস দেখবো। দেখা- ছবিই আবার দেখবো, যেমন পড়া- বই আবার পড়তাম।   দেবদাস শব্দটি উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গেই আমি চলে যাই আমার বারো তেরো বছর বয়সে। কতবার যে তখন দেবদাস পড়েছি, কতবার যে পড়তে পড়তে সারারাত পার করেছি, কতবার যে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছি, তার সংখ্যা আমার জানা নেই।

 

আমার দাদা  প্রায়ই আমাকে বই উপহার দিত। শরৎ রচনাবলী, রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ, ছিন্নপত্র, শেষের কবিতা, চোখের বালি, নজরুলের সঞ্চিতা, রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা, বঙ্কিম রচনাবলী, শরদিন্দু অমনিবাস, পথের পাঁচালি-- এসব আমি ইস্কুল জীবনেই পড়ে শেষ করেছি।    ইস্কুলের লাইব্রেরির বইগুলোও গোগ্রাসে পড়েছি। তখন  যে বই-ই পেতাম, পড়তাম।

নীহাররঞ্জন গুপ্ত, ফাল্গুনি মুখোপাধ্যায়, দস্যু বনহুর -- কিছুই  ছাড়িনি।  

দেবদাস ছবিটি যারা দেখেছে, যারা বইটি পড়েনি, তাঁদের জন্য আমি গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। কৈশোরে বা কৈশোরোত্তীর্ণ বয়সে যারা রাতে রাতে দেবদাস পড়ে কেঁদে বুক ভাসায়নি, তারা কী বুঝবে দেবদাসের! এখন না হয় দেবদাসকে মনে হয় ''চিক ফ্লিক''। কিন্তু তখন?

লেখাটি তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক থেকে নেওয়া (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/আলী