দৌলতদিয়া ঘাটে ভাঙন, সর্বনাশা পদ্মার বুকে স্বপ্নের বসত ঘর

দৌলতদিয়া ঘাটে ভাঙন, সর্বনাশা পদ্মার বুকে স্বপ্নের বসত ঘর

Other

হঠাৎ পদ্মা নদীর ভাঙন। চোখের পলকে ১০টি ঘর নদীর বুকে। ৩০টি ঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিতে প্রায় দুইশত ঘর বাড়ি।

শঙ্কায় রয়েছে লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এবং বাস টার্মিনালও। এমনি অবস্থা বিরাজ করছে দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া ঘাটে।

নদী ভাঙন কবলিত ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ পদ্মানদীর ভাঙন শুরু হয়। কিছু বুঝে উঠার আগে ১০টি বসত ঘর নদীর বুকে চলে যায়।

ঘর থেকে কেউ কিছু বের করতেও পারেনি। এসময় প্রায় ৩০টি স্বপ্নের বসত ঘর সরিয়ে নিয়েছে এলাকাবাসী।

news24bd.tv

নদী ভাঙন কবলিত পল্লী চিকিৎসক বেনজীর আহমেদ বিলাস বেপারী বলেন, প্রতিদিনের মত সকালে বাড়ী থেকে বের হয়ে দোকানে আসি। দোকান থেকে সংবাদ পেলাম নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বাড়ীতে যাওয়ার আগেই, বাড়ী চলে গেল নদীতে। আর কখনও বাড়ীতে যেতে পারবো না। তিনি কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এবার দিয়ে তিন বার নদী ভাঙনের শিকার হলাম। প্রতিবার ঘর-দরজা নিয়ে আসতে পারি। এবার কিছু আনতে পারি নাই। এখন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় যাবো।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার উজ্জল হোসেন বাবু বলেন, শেষ আমার সব শেষ। এখন দাঁড়ানোর মত কোন জায়গা নেই আমার। এতগুলো মানুষ নিয়ে কোথায় দাঁড়াবো। সর্বনাশা নদী আমার সব কিছু শেষ করে নিয়েছে। বাড়ী থেকেও কিছু বের করতে পারি নাই। তিনি দুঃখ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা শুকনো মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধ করলে আজ আমাদের এতগুলো মানুষের গৃহহীন হতো না।

হাউ-মাউ করে কাঁন্নাজড়িত ভাষায় মোঃ আক্কাস বেপারী বলেন, লকডাউনের কারণে আয়-রোজগার বন্ধ। এখন বাড়ী চলে গেল নদীতে। আমাদের মত গরীব মানুষের কি উপায় হবে। আমরা কোথায় যাবো।

আরও পড়ুন


বাগেরহাটে করোনায় স্বামীর মৃত্যু, ১৪ দিনেও জানে না স্ত্রী

নাটোরে লকডাউন উপেক্ষা করে চলছে পশুর হাট

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে বখাটের হাতে চিকিৎসক লাঞ্ছিত

উৎক্ষেপণের সময়ই ভেঙে পড়ল ভারতের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র


ভাঙনের শিকার আরেকজন বদিউজ্জামান টোকন বলেন, আজ হঠাৎ ১০টি বাড়ী চলে গেল নদীতে। ৩০টি বাড়ী সরিয়ে নিয়ে গেল। এখন ভাঙন আতংকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও বাস টার্মিনাল। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিরোধ না করলে যে কোন সময় দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও বাস টার্মিনাল। ভেঙ্গে যেতে পারে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার। বন্ধ হয়ে যেতে পারে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট।

news24bd.tv

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুল হক খান মামুন জানান, হঠাৎ নদী ভাঙনের কারণে কয়েকটি পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের সংবাদ শুনতে পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের জরুরীভিত্তিতে কিছু খাদ্য সহযোগিতা করা হবে। পর্যায়ক্রমে তাদের বসবাসের জন্য ঘর তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি জানান, জরুরীভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে দৌলতদিয়া ঘাট মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। সুতরাং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করব ঘাট রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

news24bd.tv এসএম